জনসংখ্যার নিরিখে অনেক কম টিকা পাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ।

পরিসংখ্যানে একবার চোখ বোলালেই বোঝা যায় মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ মিথ্যা নয়। কেন্দ্রের টিকাকরন কর্মসূচি তে সবথেকে বেশি টিকা পেয়েছে গুজরাট। তারপর ক্রমান্বয়ে মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, কর্নাটক ও উত্তরপ্রদেশ। গুজরাটের জনসংখ্যা যেখানে ৭ কোটির মত সেখানে কেন্দ্র টিকা দিয়েছে ২•৬০ লক্ষ ডোজ। ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ তে আধারকার্ড তৈরির হিসেব অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গের জনসংখ্যা ১০ কোটির বেশি, সেখানে দেওয়া হলো মাত্র ২ কোটি ২৯ লক্ষ টিকা! কোভিড -১৯ ভ্যাক্সিনের অ্যাস্ট্রোজেনেকার (chAdO×1-s) একটি ভায়ালে +2° থেকে +৮°সেন্টিগ্রেডে ৬ মাসের মত সময় ধরে সংরক্ষণ করে রাখা যায়। প্রত্যেক টি ভায়ালে ৪ মিলিলিটার থেকে ৫ মিলিলিটার তরল থাকে। স্বচ্ছ কাঁচের শিশি তে স্টপার লাগানো অ্যালুমিনিয়ামের ঢাকনা দেওয়া থাকে। ১০ টি করে ডোজ দেওয়ার মত করে প্যাকিং করা থাকে। ভায়ালের লেবেলে সংখ্যার উল্লেখ থাকে। ০•৫ মিলিলিটার তরল অবশ্যই টানতে হয় প্রত্যেক টি সিরিঞ্জে। খুব যত্নসহকারে দক্ষ হাতে টিকাদান সম্পন্ন করতে হয়। যখন দেখা যায় শেষের জনের বেলায় পুরো ০•৫ মিলিলিটার ভায়ালে অবশিষ্ট নেই তখন অবশ্যই সেই ভায়াল ফেলে দিয়ে নতুন ভায়াল খুলতে হবে।
কখনোই আগের ভায়ালের অবশিষ্ট এবং পরের ভায়াল থেকে বাকি টা ব্যবহার করা যায় না। ডেলিভারির সময় কড়া পর্যবেক্ষণে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় সংরক্ষিত ভায়াল উপযুক্ত কর্মী দিয়ে সরবরাহ করা হয়। ভারতীয় সময় রাত ৯ টার মধ্যে সেদিনের সরবরাহ হওয়া প্যাকিং অবশ্যই শেষ করতে হয়। বাক্সের বাইরে বিধিনিষেধ মেনে প্রত্যেক টি ভায়াল বন্টন করাই নিয়ম। এখানেই বাংলার টিকা কর্মী দের দক্ষতা। কেন্দ্রের পাঠানো ডোজের তুলনায় কিছু বেশি সংখ্যক মানুষই টিকার ডোজ পেয়েছেন, কারণ সারাদেশে গড়ে ১০০ টি ডোজের মধ্যে ৬-৭ টি ডোজ নষ্ট করে ফেলেন অন্য রাজ্যের টিকা কর্মী রা। সেখানে প্রত্যেক টি ডোজ নিপুনতার সঙ্গে সংগ্রহ করে বিধি নিয়ম মেনে টীকাকরন কর্মসূচি সফল করে যাচ্ছেন বাংলার টীকা কর্মী রা। অন্য রাজ্যে অদক্ষতার কারণে যেখানে গড়ে ৬-৭ টি ডোজ নষ্ট করে ফেলেন সেখানে এরাজ্যের টীকা কর্মী রা দক্ষ হাতে প্রত্যেক টি ভায়ালে থাকা বাড়তি ডোজ নিপুণ হাতে সদ্ব্যবহার করেন। উপরন্তু একটি ১০-১২ জন উপস্থিত না হলে ভায়াল খোলেন না টীকা কর্মী রা, কারণ একটি ভায়াল একবার খুলে ফেললে ৪ ঘন্টার মধ্যে তা ব্যবহার না করলে বাকি অংশ ফেলে দিতে হয়। অপচয় রোধে কথা সবসময় নজরে রাখা হয় সেই কারণে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন