মাত্র দু-মাস। ৩৫৬টি হাতির মৃত্যু। আফ্রিকার বত্সোয়ানায় এত অল্প সময়ে এত বিপুল সংখ্যক হাতি-মৃত্যুতে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে বিজ্ঞানী-বিশেষজ্ঞদের। কী কারণে এত অল্প সময়ের মধ্যে এতগুলি হাতির মৃত্যু হল, তা নিয়ে রীতিমত ধন্দে বিজ্ঞানীরা। হাতিমৃত্যুর পিছনে কি নতুন কোনও অসুখের হাত আছে কিনা তা এখনও জানা যায়নি।
জানা গিয়েছে, বত্সোয়ানার উত্তর-পশ্চিম ভাগেই মূলত মৃত্যু হচ্ছে হাতিদের। হাতিগুলির মৃতদেহে কোনও ক্ষতচিহ্ন পাওয়া যায়নি। এমনকি সব মৃত হাতিরই দাঁতও অক্ষত অবস্থাতেই পাওয়া গিয়েছে। তাই চোরাশিকারীদের হামলায় এই মৃত্যু নয় বলেই ধারণা বিশেষজ্ঞদের। এমনকি স্থানীয় প্রশাসনের তদন্তে বিষপ্রয়োগ বা অ্যানথ্রাক্স বা অন্য কোনও জানা রোগেরও কোনও প্রমাণ মেলেনি।
তাই হাতিগুলির মৃত্যু নিয়ে একরকম অন্ধকারেই হাতড়াতে হচ্ছে জানিয়েছেন আঞ্চলিক বন্যপ্রাণ বিভাগের এক আধিকারিক। প্রসঙ্গত, বর্তমানে আফ্রিকায় হাতিদের মোট সংখ্যার এক তৃতীয়াংশই আছে বত্সোয়ানায়। ইউনাইটেড কিংডমের চ্যারিটি ন্যাশনাল পার্কের প্রধান ড. নিয়াল ম্যাকক্যানের মতে কোনও কিছু হাতিগুলির নিউরোলজিক্যাল সিস্টেমে আক্রমণ করতে পারে। এর ফলেই হাতিগুলির আচমকা মৃত্যু হচ্ছে বলে মনে করছেন তিনি।
করোনা অতিমারীর মধ্যেই এই হাতি মৃত্যুর খবরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। হাতিগুলির মৃত্যুর কারণ জানতে মৃতদেহের নমুনা দক্ষিণ আফ্রিকা, জিম্বাবোয়ে এবং কানাডায় পাঠানো হয়েছে। এমনতিই চোরাশিকার, খাদ্য ও বাসস্থানের সংকোচনে জন্য সংকটে আফ্রিকার বন্যপ্রাণ। ক্রমশ কমে আসছে হাতির সংখ্যাও। এই পরিস্থিতিতে বত্সোয়ানাতেই আফ্রিকার মোট হাতির সংখ্যার এক তৃতীয়াংশের বাস। ৯০-এর দশকের শেষের দিকে বত্সোয়ানায় হাতির সংখ্যা বাড়ে। সেই সময় এখানে হাতির সংখ্যা ৮০,০০০ থেকে বেড়ে হয় ১৩০,০০০। এর ফলে বেড়েছে হাতি-মানুষে সংঘাতও।