নিজস্ব প্রতিনিধি : প্রাপ্তবয়স্ক নয় ঋতুস্রাব হলেই একটি মেয়ের বিয়ে বৈধ। পাকিস্তানে ১৪ বছরের ছোট মেয়েকে জোর করে ধর্মান্তরিত এবং অপহরণ করে বিয়ের অভিযোগের ঘটনা এদিন এই রায় দিল পাকিস্তানের আদলত।
ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৯ সালের ১০ অক্টোবর। খ্রিস্টান পরিবারের মেয়ে ১৪ বছরের হুমা ইউনুসকে বাড়ি থেকে অপহরণ করেন বছর আঠাশের আব্দুল জব্বার। জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত করে হুমাকে বিয়ে করেন তিনি। তারপরে কোনওরকমে পালিয়ে বাবা-মায়ের কাছে ফিরে আসে হুমা।
এরপর হুমার পরিবার দাবী করেন, ”২০০৫ সালের ২২ মে হুমার জন্ম। গির্জা এবং স্কুলের নথিপত্রেও তার প্রমাণ রয়েছে। সেই হিসাবে হুমার বয়স ১৪ বছর। সিন্ধ বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ আইন অনুযায়ী, বিয়ের ন্যূনতম বয়স যেখানে ১৮ বেঁধে দেওয়া হয়েছে, সেখানে হুমা ও আব্দুলের বিবাহ আইনত বৈধ নয়।” কিন্তু তাঁরা দাবী করেন, ”আদালতের দুই বিচারক মহম্মদ ইকবাল কালহোরো ও ইরশাদ আলি নির্দেশ দেন মেয়েটির মেডিক্যাল পরীক্ষা করার। মেডিক্যাল পরীক্ষার পরে জানা যায়, মেয়েটির ঋতুস্রাব শুরু হয়েছে। একথা শোনার পরেই ৩ ফেব্রুয়ারি দুই বিচারক জানান, শরিয় আইন অনুযায়ী ঋতুস্রাব শুরু হলে মেয়েরা আর নাবালিকা থাকে না। তাই এই বিয়ে বৈধ। এমনকি ফের মেডিক্যাল পরীক্ষা করে হুমার বয়স নির্ধারণ করার নির্দেশও দিয়েছেন বিচারকরা।
আগামী ৪ মার্চ এই মামলার পরবর্তী শুনানি। তবে, ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন হুমার পরিবারের আইনজীবী ইউসুফ। তিনি বলেন, ‘‘অপহরণ এবং জোর করে বিয়ে রুখতেই ২০১৪ সালে বাল্য বিবাহ রদ আইন আনা হয় সিন্ধ প্রদেশে। কিন্তু হাইকোর্টের মন্তব্য সেই আইনের পরিপন্থী। তদন্তকারী অফিসাররাও আবদুলের পক্ষে রয়েছেন বলেও অভিযোগ তাঁদের। ’’
সুপ্রিম কোর্টে মামলা না ওঠা পর্যন্ত, হুমাকে সরকারি হোমে রাখার আর্জি জানিয়েছে হুমার পরিবার। সেই সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে অনলাইনে আন্তর্জাতিক মহলের সাহায্যও চেয়েছেন হুমার মা। তিনি বলেছেন, ‘‘বিচার ব্যবস্থার উপর আস্থা রাখতে পারছি না। খ্রিস্টানদের এ দেশের নাগরিক হিসাবে মর্যাদা দিতে ব্যর্থ সরকার।’’