নিজস্ব সংবাদদাতা: করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক গ্রাস করেছে গোটা বিশ্বকে। উৎসস্থল চীনকে কার্যত বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে একাধিক রাষ্ট্র। ২৬টি দেশে ইতিমধ্যেই থাবা বসিয়েছে করোনা ভাইরাস।মারাত্মক এই ভাইরাসের কারণে যেভাবে হুহু করে মানুষের মৃত্যু হয়েছে তাতে আতঙ্ক দিন দিন বাড়ছে বিজ্ঞানীদের। চীন থেকে বিশেষ বিমান পাঠিয়ে এদেশের নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে এনেছে নয়াদিল্লি। ভারতের যাতে চীন ফেরত কারুর থেকে ভাইরাস না ছড়িয়ে পরে সেদিকে নজর দিয়ে বাড়তি সর্তকতার কথা জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক।এবার জাহাজের ভেতর থেকে ভারত সরকারের উদ্দেশ্যে কাতর আর্জি শোনালেন বাংলার এক বাসিন্দা।
সমুদ্রের বুকে কোয়ারেন্টাইন করে রাখা প্রমোদতরী। ক্রু মেম্বার, যাত্রী মিলিয়ে ভিতরে আটকা পড়েছেন কয়েক হাজার। উদ্ধারকারী জাহাজের দেখা নেই, সরকারের তরফে কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে সেই ব্যাপারেও আঁধারে যাত্রীরা। তারই মধ্যে ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়াচ্ছে হুহু করে। এই ক্রুজ শিপের নাম ‘ডায়মন্ড প্রিন্সেস।’ জাপানে যাওয়ার কথা ছিল সেই জাহাজের। কিন্তু বন্দরে ভিড়তে দেওয়া হয়নি তাকে। ইয়োকোহোমার কাছেই সমুদ্রের বুকে আটকে পড়েছে জাহাজ। সেই জাপান উপকূল থেকে ভারত সরকারের উদ্দেশে ফের বার্তা পাঠালেন বাঙালি যুবক। তাঁর দাবি, রোজই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। এমন পরিস্থিতিতে ভারতীয়দের উদ্ধার করতে দ্রুত ব্যবস্থা নিক ভারত সরকার।
উত্তর দিনাজপুর জেলার চাকুলিয়ার কানকির হাতিপার এলাকার বাসিন্দা ওই যুবকের নাম বিনয়কুমার সরকার। জাপানের ডায়মন্ড প্রিন্সেস নামে একটি জাহাজের কেবিন ক্রু তিনি। শুক্রবার জাহাজ থেকেই ফেসবুকে একটি ভিডিয়ো বার্তা পোস্ট করেন তিনি।ওই ভিডিয়োয় বিনয় বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে ইয়োকোহামা বন্দরে জাহাজের মধ্যে আটকে রয়েছি আমরা। ডেঞ্জার জোনে রয়েছি। গত কাল ২১ জন করোনাভাইরাস পজিটিভ ছিলেন। মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে, আজ তা ৬২-তে গিয়ে ঠেকেছে। তাঁদের মধ্যে দু’জন ক্রু সমেত ৪১ জনকে আজ অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়ে বাইরে পাঠানো হয়েছে। ওঁদের আইসোলেটেড করে রাখা হবে।’’
আমার সকাল: মৃত্যুমিছিল চীনে, ২৪ ঘন্টায় মৃত ৮৬! করোনার থাবায় দিশেহারা গোটা দেশ
বিনয় জানিয়েছেন, হংকংয়ের এক যাত্রীর মধ্যে প্রথম করোনাভাইরাসের খোঁজ মেলার পরেই জাহাজ দু’সপ্তাহের জন্য কোয়ারেন্টাইন করে দেওয়া হয়। জাহাজে এই মোট যাত্রী সংখ্যা ২,৬৬৬ জন। যার মধ্যে ১৬০ জন ভারতীয়। ক্রু মেম্বাররা রয়েছে ১,০৪৫ জন। সকলের মধ্যেই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই নতুন এক একজনের রিপোর্ট পজিটিভি আসছে।বিষয়টি জানার পরেই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তাঁর দলীয় সাংসদদের জানিয়েছেন যত দ্রুত সম্ভব বিষয়টি যাতে তারা দিল্লির নজরে আনে। পরিস্থিতি যে কঠিন তা বুঝতে পারছেন মুখ্যমন্ত্রী নিজেও। তবে কেন্দ্রের তরফে প্রতিটি রাজ্যকে সর্তক করে জানানো হয়েছে যাতে সবরকমভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য তারা প্রস্তুত থাকে।