আমার সকাল: মানুষই আগুন লাগিয়েছে আমাজনে! ‘পৃথিবীর ফুসফুস’কে বাঁচাতে এগিয়ে এল বলিভিয়া, জল ঢালবে বিমান

নিজস্ব সংবাদদাতা: জ্বলছে আমাজনের ঘন জঙ্গল! আগুনের গ্রাসে পৃথিবির ফুসফুস। শুধু আগস্টে ৭২ হাজার ৮৪৩ বার আগুন ধরেছে অ্যামাজন রেনফরেস্টে। আর সাত দিনের হিসেব নিলে, অগ্নিকাণ্ড ৯,৫০০ বারেরও বেশি। ভয়াবহ ভাবে পুড়ে যাচ্ছে আমাজনের অরণ্য।

আরো পড়ুন:     জ্বলছে অ্যামাজনের ঘন জঙ্গল

পৃথিবীর মোট অক্সিজেনের ২০ শতাংশ সরবরাহ করে যে ‘ফুসফুস’, তা দ্রুত জ্বলে যাচ্ছে। লক্ষ লক্ষ গাছের সঙ্গেই ঝলসে মৃত্যু হচ্ছে বহু পশুপাখির।সপ্তাহ তিনেক হতে চলল এই অবস্থার। সারা বিশ্ব জুড়ে এ নিয়ে আলোচনা হলেও, আগুন নেভানোর ব্যবস্থা করা যায়নি কোনও ভাবেই।

এই কাজে এই প্রথম এগিয়ে এল বলিভিয়া। বলিভিয়ার রাষ্ট্রপতি ইভো মোরালেস আগেই সাহায্যের কথা বলেছিল ব্রাজিলকে। কিন্তু তখনও সে ভাবে নড়ে বসেনি ব্রাজিলের সরকার। এবার দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। তাই দাবানলের এই ছড়িয়ে পড়া রুখতে সুপার ট্যাঙ্কার বোয়িং বিমান ৭৪৭ ভাড়া করার কথা ঘোষণা করেন ইভো। শুক্রবার থেকেই আগুন আয়ত্বে আনতে আকাশ পথে ওই ট্যাঙ্কার নিয়ে অভিযান শুরু হয়েছে।

 

নির্দিষ্ট ওই জলবাহী ‘সুপার ট্যাঙ্কার’টি-তে সব চেয়ে বেশি জল ধরে। ১১৫ হাজার লিটার জল নিয়ে উড়তে পারে সেটি। আগুনে পুড়তে থাকা আমাজন জঙ্গলের উপরে ওই বিমান থেকেই জল ঢালা হবে। ট্যাঙ্কারটি ওড়ার আগে একটি বায়ুসেনার বিমান উড়ে গিয়ে চিহ্নিত করে নেয় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলি। তার পরে সেই অঞ্চল দিয়ে জল ঢালতে ঢালতে উড়ে যায় ‘সুপার ট্যাঙ্কার’।

এই ট্যাঙ্কারের সঙ্গে আছে তিনটি অতিরিক্ত হেলিকপ্টার। আছেন ৫০০ জন ফায়ার ফাইটার সেনা, যাঁরা প্রয়োজনে জঙ্গলে নেমে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। কিন্তু পৃথিবীর সবচেয়ে বড়ো অভয়রন্য জ্বলতে দেখে আতঙ্কিত বিশ্ববাসী। প্রতি বছরই কম-বেশি দাবানল লাগে আমাজনের অরণ্যে। কিন্তু এই বারের দাবানল তার চেয়ে অনেকটা আলাদা।

প্রতি দিন গড়ে ১০ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে অরণ্য ধ্বংস হয়ে যেতে শুরু করার পরে আলোচনায় উঠে এসেছে এই অরণ্য। সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রেন্ডিং হয়েছে হ্যাশট্যাগ প্রে ফর আমাজন। অভিযোগ উঠেছে ষড়যন্ত্রের। মনে করা হয়েছে, কোনও মুনাফার বশবর্তী হয়ে ইচ্ছে করে পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে আমাজনের রেনফরেস্ট। সেই রেনফরেস্ট, যা পৃথিবীর মোট চাহিদার ২০ শতাংশ অক্সিজেনের জোগান দেয়, যাকে বলা হয় পৃথিবীর ফুসফুস।

যড়যন্ত্রের ইঙ্গিত আগেই মিলে থাকলেও, প্রমাণ ছিল না কিছু। এই দাবানল যে প্রাকৃতিক নয়, ইচ্ছাকৃত ভাবে ঘটানো, তার সপক্ষে কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি। কিন্তু এবার স্যাটেলাইটের পাঠানো ছবি ভাল করে খুঁটিয়ে দেখে পরিবেশবিজ্ঞানীরা অনেকটাই নিশ্চিত হলেন এই দাবানল শুধুই প্রাকৃতিক নয় মোটেই। মানুষের হাত ছাড়া এত বড় মাপের দাবানল কার্যত অসম্ভব। উপগ্রহ চিত্রগুলি দেখে রীতিমতো শিহরিত পরিবেশ বিজ্ঞানীরা।

 

 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন