পরিবেশ দূষণ রোধে নির্বাচন পরবর্তী বর্জ্য দিয়ে বানানো হবে চমত্‍কার সব ব্যাগ আর ছাতা ।

১৭ই এপ্রিল নির্বাচন শেষ হল ইন্দোনেশিয়ায়। বিপুল আয়োজনে সম্পন্ন হল এই নির্বাচন । ইন্দোনেশিয়ার  ইতিহাসে এই প্রথম প্রেসিডেন্ট, ভাইস প্রেসিডেন্ট ও এম পি আর এর নির্বাচন একই দিনে হল। উনিশ কোটি মানুষ অংশ নিয়েছিলেন নির্বাচনে। ১৬ টি পুরনো ও ৪ টি নতুন দল লড়েছে এই নির্বাচনে।

বিপুল এই নির্বাচনী আয়োজনে প্রচার এর আয়োজন ও সেরকমই হবে। ফলে ব্যানার-ফেস্টুনে ছেয়েছিল পুরো দেশ। এখন সেসব ব্যানার-ফেস্টুনের গন্তব্য হওয়ার কথা বিভিন্ন ভাগাড়। কিন্তু তা না করে বর্জ্যকে কাজে লাগাতেই উদ্ভাবনী চিন্তা প্রয়োগ করছেন ইন্দোনেশীয়রা।প্লাস্টিকের ব্যানার, ফেস্টুন আর প্ল্যাকার্ড দিয়ে চমত্‍কার সব ব্যাগ আর ছাতা বানানো হবে সেদেশে। এর মাধ্যমে পরিবেশ দূষণ রোধের পাশাপাশি নিত্য প্রয়োজন মেটানোরও চিন্তা করছে ইন্দোনেশিয়া। এর আগে মানুষ জানতো না আসলে এসব ব্যানার-ফেস্টুনের গন্তব্য কোথায় হবে। তবে এবার আগেই নির্বাচনের বর্জ্য নিয়ে নতুন কিছু করার কথা ভাবা হয়েছিল। নির্বাচনের পর ব্যানার-ফেস্টুনগুলো সরানোর কাজ করে কোনো কোনো এলাকার স্থানীয় প্রশাসন।এরপর সেগুলোকে নির্দিষ্ট স্থানে জড়ো করা হয়। শুধু জাকার্তার গাম্বির ডিস্ট্রিক্ট থেকেই প্রায় সাড়ে ছয় হাজার ব্যানার আর পতাকা সরানো হয়েছে। গাম্বির জেলার পুলিশ প্রধান ফিতরানো জায়া পুত্র ডয়চে ভেলেকে বলেন, ”ব্যানার আর পতাকাগুলো নিবন্ধনকৃত। সেগুলো একত্র করে নেয়া হচ্ছে ক্যাকুং ক্যাম্পে।
কোনো দল যদি চায়, তাহলে তারা সেখান থেকে পুনরায় সেগুলো ব্যবহার করতে পারে।” এর বাইের পশ্চিম জাভার বান্দুং এলাকায় অধিবাসীদের কাছ থেকে ব্যানার-ফেস্টুন সংগ্রহ করছে পারংপং নামে একটি আবর্জনা রিসাইক্লিং কোম্পানি। এগুলো দিয়ে ওই প্রতিষ্ঠান অনেকবার ব্যবহারযোগ্য ব্যাগ তৈরি করেছে এর আগে । পারংপং-এর প্রতিষ্ঠাতা রেন্ডি আদিত্য ওয়াসিদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ”আগে ব্যাগ বানানোর জন্য আমরা পুনরায় ব্যবহারযোগ্য জিনিস খুঁজতাম। এখন পুরাতন ব্যানার-ফেস্টুনের মতো কাঁচামাল আমরা পাচ্ছি।এগুলো শক্ত এবং জলনিরোধী।নির্বাচনী  বর্জ্যে ব্যাগ বানানোর এই উদ্যোগ মানুষের মধ্যে বিশেষ আগ্রহ তৈরি করছে বলে জানান ওয়াসিদ। মানুষ নিজের শহরের কথা চিন্তা করেই ব্যানার-ফেস্টুন তাঁর প্রতিষ্ঠানে পাঠাচ্ছে। ২০০৫ সালের বন্যায় ভেসে আসা আবর্জনায় চাপা পড়ে এবং আর্বজনার স্তূপের আগুনের ফলে ১০০ মানুষ মৃত্যুর ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছিল বান্দুং। সে কারণে আবর্জনাকে ভিন্ন উপায়ে ব্যবহারের বিষয়টি তাঁদেরকে বেশি ভাবাচ্ছে।
নির্বাচনী বর্জ্যকে রিসাইক্লিংয়ের আইডিয়া দিতে প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে মধ্য জাভা কর্তৃপক্ষ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই প্রতিযোগিতার ঘোষণা দেন সেখানকার গভর্নর গাজার প্রাণও।এক ভিডিও বার্তায় এই প্রতিযোগিতার প্রচার চালান তিনি। এই প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ১০ জনকে ২০ মিলিয়ন ইন্দোনেশিয়ান রুপিয়া পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছেন গভর্নর। ২০ এপ্রিল পর্যন্ত আইডিয়া জমা দেয়ার সুযোগ থাকছে সেখানে।এখন দ্যাখার আমাদের দেশ কবে এমন উদ্যোগ নেয়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন