জাতীয় তাঁত দিবসে তাঁতশিল্পী দের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ।



আজ ৭ই আগস্ট জাতীয় তাঁত দিবস পালিত হচ্ছে। ২০১৫ সাল থেকে তাঁতশিল্পের কারিগর দের উৎসাহিত করার উদ্দেশ্য নিয়ে এই দিনটি জাতীয়  তাঁত দিবস হিসেবে পালিত হয়। ৭ই আগস্টে দিনটির আরও একটি ইতিহাস আছে, এই দিনটিতে স্বদেশী আন্দোলন শুরু হয়েছিল। লক্ষ্য ছিল দেশীয় তাঁত ও তাঁতিদের উৎসাহিত করা এবং আর্থিক ভাবে সমৃদ্ধ করা। 
এই উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী 'ভারতীয় বস্ত্র ইভম শিল্প কোশ ' নামে একটি ই পোর্টাল চালু করেছেন। এটি ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ ফ্যাশন টেকনোলজি বা NEFT দ্বারা তৈরি টেক্সটাইল ও কারুশিল্পের ভান্ডার। তাঁত, খাদিতাঁত, কারিগর এবং টেক্সটাইল এবং এমএসএমই সেক্টরের স্টেকহোল্ডার রা এই ই পোর্টাল উদ্বোধন অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন। তাঁদের বক্তব্যের মূল বিষয় ছিল আমাদের দৈনন্দিন জীবনে তাঁতের পোশাক বেছে নেওয়ার জন্য উৎসাহ প্রদান এবং এর সুবিধা ও তাঁতের পোশাক পরিধানের উপকারিতা। 
হ্যান্ডলুম পোশাক কোনো প্রকার দূষনকারী বা রাসায়নিক ছাড়াই বিশুদ্ধ জৈব পদার্থ দিয়ে তৈরি হয়। প্রস্তুতির সময় বিদ্যুৎ ব্যবহারের প্রয়োজন পরে না। প্রতিটি ধাপে সম্পূর্ণ তাঁত প্রক্রিয়াটি টেকসই এবং ইন্সটলেশন থেকে ফেব্রিক, রঙ নির্বাচন সবটাই নিখুঁত প্রক্রিয়ায় পরিচালিত হয়,  তাঁতে ব্যবহৃত প্রাকৃতিক তন্তুগুলি বায়োগ্রেডেবল এবং ন্যুনতম কার্বন ফুটপ্রিন্ট ফেলে। তাই এতে পরিবেশের কোনো ক্ষতি হয় না। এই পোশাক পরিধানে ত্বকে কোনোরকম জ্বালা, প্রদাহ বা অ্যালার্জি হয় না। তাঁতের কাপড় অতিসূক্ষ্ণ ভাবে অসংখ্য ছিদ্র যুক্ত হওয়ার ফলে ত্বক কে শ্বাস নিতে সাহায্য করে এবং গ্রীষ্ম, বর্ষা, শীত যেকোনো ঋতু তে যে কোনো উৎসব ও আনন্দ অনুষ্ঠানে পরিধান যোগ্য। 

বর্তমানে ক্রেতাদের মধ্যে হ্যান্ডলুমের পোশাক নিয়ে জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়াও হ্যান্ডলুমের পোশাক পরিবেশ বান্ধব হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পকেট বান্ধব ও বটে। প্রচুর টেকসই হয়। বারবার ধোবার পরেও রঙ নষ্ট হয় না। পরিধানে আরাম, দাম সাধ্যের মধ্যে এবং প্রচুর রঙিন ও বিভিন্ন ডিজাইনের সমাহারে তৈরি বলে প্রিয়জন কে অনায়াসে উপহার দেওয়া যেতে পারে। 
সময় এসেছে বাংলার হ্যান্ডলুম কে উৎসাহ দেবার ও সমর্থন করার।তাঁত একটি প্রাচীন দক্ষতা যা প্রজন্মের পর প্রজন্ম চলে আসছে। হস্তচালিত তাঁত দিয়ে তৈরি সবচেয়ে সুন্দর একটি প্রক্রিয়া যা কখনোই মেশিন দ্বারা তৈরি করা যায় না। 
বছরের পর বছর সৃষ্টিশীল এই কাজে দারিদ্র্যের বাধা ও স্বল্প লাভের জন্য বর্তমান যুব সমাজ এই শিল্প থেকে পিছিয়ে এসেছিল।বর্তমানে আবার এই শিল্প কে বাঁচিয়ে তোলার জন্য  ও অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রামের জন্য একটা নতুন আলোর রেখা দেখা দিয়েছে। 
তাই তাঁতের পোশাক কেনার জন্য ও তাঁতশিল্প কে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য চারিদিকে একটা উৎসাহ প্রদানের প্রক্রিয়া চলছে। ভারতের তাঁত ও তাঁতিদের সমর্থন করার এবং তাদের মুখে হাসি ফোটানোর এই উৎসবে আমরাও সামিল হতে পারি।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন