সেদিন পিছু হটেছিলেন বুদ্ধ। আজ মাথা নোয়ালেন মোদী। অহংকার হারলো অন্নদাতাদের কাছে।

আচমকা কৃষকদের উপর চাপিয়ে দেয়া কৃষি আইন না-কি কৃষক দের আচ্ছে দিনের কথা ভেবেই তৈরি হয়েছিল, কিন্তু এই যুক্তি ধোপে টেকেনি। প্রবল প্রতিরোধ গড়ে ওঠে এই নয়া শিল্পপতি বান্ধব আইন প্রণয়নের বিরুদ্ধে। জাঠ ও শিখ সম্প্রদায় ক্ষুব্ধ হয় এবং তার হাতেগরম জবাব মেলে শিরোমণি আকালি দলের জোটসঙ্গ পরিত্যাগে।কৃষি আইন বিলের প্রতিবাদে অনড় কৃষকদের সামনে হাতজোড় করে ক্ষমা চাইলেন নরেন্দ্র মোদী। কৃষকদের শান্তিপূর্ণ অসমসাহসী আন্দোলনের সামনে হাতজোড় করে ক্ষমা চাইতে বাধ্য হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেদিন আর এদিনে দুস্তর পার্থক্য।দিল্লির এজদম কাছে ২৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে রোদ জল ঝড়বৃষ্টি উপেক্ষা করে চটের বিছানায় শুয়ে বসে প্রায় একবছর ধরে চলছিল কৃষক আন্দোলন। এই বছরে অনেক অভিসন্ধি, পুলিশের প্রতিরোধ, কাঁটার খোঁচা, কংক্রিটের ব্যারিকেড কোনোকিছুই একবিন্দু টলাতে পারেনি কৃষকের অনড় জেদ কে, বরং আরও দলবদ্ধ হয়েছে তাদের সংগ্রাম। তাদের সহযোদ্ধাদের মৃত্যু আরও চোয়াল শক্ত করেছে কৃষক দের কৃষি আইন বিরোধী আন্দোলন কে।গুরুনানক জয়ন্তী র পুণ্য দিবস কে কাজে লাগিয়ে জনগনের সামনে হাত জোড় করে ক্ষমা চাইলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেদিন বলেছিলেন " আন্দোলনজীবীরা আসলে অনেকটা পরজীবীর মতো " একবছরের মধ্যেই উলটপুরাণ। হাতজোড় করে বললেন "সৎ মন ও পবিত্র হৃদয়ে বলতে চাই যে, হয়তো আমাদের তপস্যায় কোনও খামতি রয়ে গেছিল। যে কারণে প্রদীপের আলোর মতো সত্য কিছু কৃষক ভাইকে আমরা বোঝাতে পারিনি।" প্রসঙ্গত কেন্দ্রের আয়তাধীন কৃষি ক্ষেত্র কে তিনটি বিলের মাধ্যমে বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার মনস্থ করে নরেন্দ্র মোদী সরকার। সেই মতো রাজ্যসভায় ২০ সে সেপ্টেম্বর ধ্বনিভোটে পাস হয়ে যায় কৃষি বিল। অনতিবিলম্বে ২৫ সে নভেম্বর সিঙ্ঘু সীমানায় পাঞ্জাব ও হরিয়ানার কৃষকেরা আন্দোলনের ডাক দেন। দিল্লি পুলিশ প্রথমে জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস দিয়ে প্রতিরোধ করেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রি অমিত শাহ ২৬ নভেম্বর আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মেটানোর আবেদন জানান। পত্রপাঠ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন কৃষকেরা। ৩ ডিসেম্বর থেকে পরপর দুটো বৈঠকের পরেও নিজেদের বক্তব্যে অনড় থাকেন কৃষকেরা। ৯ ডিসেম্বর কৃষি আইন সংশোধনের প্রস্তাবও মেনে নিলেন না তাঁরা উল্টে ১১ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানান। ২০২১ সের ৪ জানুয়ারি কৃষক দের সঙ্গে সপ্তম দফার বৈঠকও ব্যর্থ হয়। ১২ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট ৩ কৃষি আইন বিল বলবৎ করায় স্থগিতাদেশ জারি করে। ২৬ জানুয়ারি ট্রাক্টর মিছিল করে লাল কেল্লায় বিক্ষোভ জানাতে যায়। বিক্ষোভ কারীদের একাংশ লাল কেল্লার দেয়াল বেয়ে উঠে জাতীয় পতাকা নামিয়ে নিজেদের নিশান সাহিবের পতাকা উত্তোলন করে। সেখানে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে এক বিক্ষোভ কারীর মৃত্যু হয়। এরপরই বিশ্বজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে কৃষি আইনের বিরুদ্ধে। টুইট যুদ্ধ শুরু হয়। আচমকা টুইট অ্যাকাউন্ট ব্লক হয়ে যায় পরিবেশ কর্মী গ্রেটা থুনবার্গ সহ একাধিক বিদ্বজনের। ২৭ মে ৬ মাস পুর্ণ হতে কালাদিবস পালন করেন কৃষকেরা এবং ভারতীয় কৃষক আন্দোলনের নেতা রাকেশ টিকায়েত ঘোষণা করেন দরকার হলে ২০২৪ সালে নরেন্দ্র মোদী সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়া পর্যন্ত চলবে আন্দোলন। ৭ আগস্ট দেশের ১৪ টি বিরোধী দলের নেতা দিল্লির যন্তর মন্তরে কৃষকদের কিষান সংসদে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। রাহুল গান্ধী ঘোষণা করেন তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে সমস্ত বিরোধী দল একজোট হয়ে কৃষকদের পূর্ণ সমর্থন দেবে। ৩ অক্টোবর সবচেয়ে নির্মমতার সাক্ষী থাকে সমস্ত দেশবাসী, উত্তরপ্রদেশের লখিমপুর খেরি তে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্রের ছেলে আশিষ মিশ্র তার সঙ্গী সাথীদের নিয়ে আন্দোলন রত কৃষক দের উপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে দেয়। চারজন কৃষকের চাকায় পিষ্ট হয়ে মৃত্যু বরণ করেন। ক্ষুব্ধ হয়ে কৃষকেরা অজয় মিশ্রের ছেলে আশিষ মিশ্রের গাড়ি জ্বালিয়ে দেয়। #Narendra Modiapologises #3farmerslaw#SinghuBorder#started19.11.2020.

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন