উজ্জয়িনীতে পাকড়াও বিকাশ দুবে।

অবশেষে ইতি পড়ল প্রায় সপ্তাহখানেকের নাটকে। কানপুরে ৮ পুলিশ খুনে অভিযুক্ত গ্যাংস্টার বিকাশ দুবেকে গ্রেফতার করল পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকালে মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়িনীর একটি মন্দির থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। গত এক সপ্তাহ ধরে তাকে তাড়া করে বেড়িয়েছে পুলিশ। কিন্তু বারেবারে পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে পালিয়ে যায় সে। অবশেষে বৃহস্পতিবার তাকে পাকড়াও করতে সফল হল পুলিশ।
প্রসঙ্গত, উত্তরপ্রদেশে খুন, অপহরণ, তোলাবাজি, সাম্প্রদায়িক হিংসাসহ ৬০টি মামলা রয়েছে বিকাশের বিরুদ্ধে।
তারমধ্যে থানায় ঢুকে এক মন্ত্রীকে খুন করার মতো হাইপ্রোফাইল মামলাও রয়েছে। কানপুরের বিকরুতে আটজন পুলিসকর্মীকে খুন করার পর গত ২ জুলাই থেকেই ফেরার ছিল বিকাশ। তিন রাজ্যে তাকে খুঁজছিল পুলিস। এর আগে তার মাথার দাম আড়াই লাখ টাকা ঘোষণা করেছিল প্রশাসন। কিন্তু বিকাশের দাপট এমনই যে তাকে ধরিয়ে দেওয়ার মতো বুকের পাটা কারোর হয়নি। কানপুরের বিকরুতে পুলিশকর্মীদের নৃশংস খুনের পর তার মাথার দাম বাড়িয়ে দ্বিগুণ করা হয়েছিল। তাতেও প্রথমদিকে বিশেষ সুবিধা করতে পারেনি পুলিশ। কারণ অভিযোগ, সর্ষের ভূতেদের ভরসায় বহাল তবিয়তেই ছিলেন এই গ্যাংস্টার। কিন্তু পুলিশ খুনের ঘটনা তাকে কিছুটা বেকায়দায় ফেলে দেয়। রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতাই হোক বা অন্য কোনও কারণই হোক পুলিশকে অনেকটাই ফ্রি হ্যান্ড দেওয়া হয় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। এরপরই বাহিনীর ‘ভূতেদের’ বিরুদ্ধে প্রথমে ব্যবস্থা নেয় প্রশাসন। বেশ কিছু বদলি, সাসপেন্ড করে গ্যাংস্টারের পুলিশের অন্দরের খবর পৌঁছানর রাস্তা কিছুটা হলেও বন্ধ করতে পারে প্রশাসন।

বিকাশের তিন সঙ্গীকে এনকাউন্টারে নিকেশও করে পুলিস। বুধবারই এনকাউন্টারে মৃত্যু হয়েছে বিকাশের ঘনিষ্ঠতম সহযোগী অমর দুবের। অপরদিকে মঙ্গলবার হরিয়ানার ফরিদাবাদ থেকে ধৃত বিকাশের সহযোগী প্রভাত ও তার সঙ্গে ধৃত আরও একজনকে কানপুর নিয়ে যাওয়া হয়। বৃহস্পতিবার সকালে তারা পালানোর চেষ্টা করে বলে অভিযোগ পুলিশের। সেই সময়ই দুটি পৃথক এনকাউন্টারে তাদের প্রাণ যায়।
এক শীর্ষ পুলিশ কর্তা জানিয়েছেন, প্রভাতকে নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ ভ্যানের টায়ারে সমস্যা হলে পুলিশকর্মীরা ভ্যানের টায়ার পাল্টানোর কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। তখনই পুলিশের থেকে পিস্তল ছিনিয়ে নিয়ে পালাতে চেষ্টা করে প্রভাত। সে পুলিশকর্মীদের লক্ষ করে গুলি চালালে পালটা গুলি চালায় পুলিশও। তার পায়ে গুলি লাগে। তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।
বিকাশের আর এক সহযোগী বাউভা দুবে ওরফে প্রভীনেরও এ দিন সকালে অপর একটি এনকাউন্টারে মৃত্যু হয়। তার মাথার দাম ছিল ৫০,০০০ টাকা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন ভোরে চারজন সশস্ত্র দুষ্কৃতী একটি গাড়িতে লুঠপাট চালায়। খবর পেয়ে ঘণ্টাখানেক বাদে একটি স্করপিও গাড়িতে করে পালানোর সময় তাদের পথ আটকায় পুলিশ। পুলিশের তাড়া খেয়ে গুলি তারা গুলি চালালে পালটা গুলি চালায় পুলিশও। এই ঘটনা এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি মারাত্মক জখম হয়। তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে ডাক্তাররা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পরে তাকে বিকাশের সহযোগী প্রবীণ বলে শনাক্ত করে পুলিশ।
তারপর বৃহস্পতিবারই সরাসরি জালে পড়ে রাঘর বোয়াল বিকাশও। পুলিশ সূত্রে
জানা গিয়েছে, উজ্জয়িনীর মহাকাল মন্দিরে সকাল আটটা নাগাদ দেবদর্শনের জন্য গিয়েছিল বিকাশ। মন্দির চত্বরের এক দোকানদার বিকাশকে চিনতে পেরে মন্দিরের নিরাপত্তারক্ষীদের জানান। খবর যায় পুলিশেও। মন্দিরের নিরাপত্তরক্ষীরা তাকে আটকালে ধস্তাধস্তি শুরু করে দেয় সে। পরে পুলিশ এসে তাকে গ্রেফতার করে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন