করোনাকালে বিশ্বকে একটু হলেও স্বস্তির খবর শোনাল রাশিয়া। রুশ বিজ্ঞানীরা করোনার প্রতিষেধক তৈরি করে ফেলেছেন। এমনকি বিশ্বে প্রথম মানব শরীরে করোনা ভ্যাকসিনের প্রয়োগও সফল হয়েছে। এখন সবকিছু সঠিকভাবে চললে আগামী অসস্ট মাসেই বাজারে চলে আসবে এই মারণ ভাইরাস প্রতিরোধী ভ্যাকসিন। রাশিয়ার গামালেই ইন্সটিটিউট অফ এপিডেমোলজি অ্যান্ড মাইক্রোবায়োলজি করোনার এই ভ্যাকসিনটি তৈরি করেছে। এই খবর জানিয়েছে সে দেশের সভরেন ওয়েলথ ফান্ড। শুধু তাই নয়, চলতি বছরের মধ্যে নিজেদের দেশে পরীক্ষামূলক কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের ৩ কোটি ডোজ উৎপাদনের পরিকল্পনা নিয়েছে রাশিয়া। এ ছাড়া আরও ১৭ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন বিদেশের মাটিতে উৎপাদন করার জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।
রাশিয়ার সেচেনভ বিশ্ববিদ্যালয়ে মানব শরীরে করোনার ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ সম্পন্ন হয়েছে এই সপ্তাহেই। গত এক মাস ধরে মোট ৩৮ জন স্বেচ্ছাসেবকের উপরে এই পরীক্ষা চালানো খবর সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন রুশ বিজ্ঞানীরা। মানব শরীরে এই ভ্যাকসিন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে বলে গবেষকরা জানিয়েছেন। এই ভ্যাকসিন সম্পূর্ণ নিরাপদ বলে দাবি তাঁদের। যদিও এই ভ্যাকসিনের প্রয়োগে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কতটা বাড়ছে বা এই ভ্যাকসিন কতদিন পর্যন্ত কার্যকর থাকবে সে সম্পর্কে বিশদে কিছু জানাননি রুশ বিজ্ঞানীরা।
সংবাদসংস্থাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রাশিয়ান ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডের প্রধান জানিয়েছেন, অগস্ট মাসেই কয়েক হাজার ব্যক্তির উপরে করোনা ভ্যাকসিনের ফেজ-থ্রি ট্রায়াল শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, এই ট্রায়ালের ফলাফলের ভিত্তিতেই আগামী অগস্ট মাসে এই ভ্যাকসিন রাশিয়ায় এবং সেপ্টেম্বরে অন্যা দেশগুলিতে উৎপাদনের অনুমোদন দেওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। সুতরাং এটিই বিশ্বে প্রথম ভ্যাকসিন হতে চলেছে।
তিনি আরও জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে আরও ১০০ জনের উপরে এই ভ্যাকসিনের ফেজ-টু ট্রায়াল চলছে। আগামী ৩ অগস্টের মধ্যে এই পরীক্ষার প্রক্রিয়া শেষ হবে। তার পরে রাশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের দু’টি দেশে চলবে এই ভ্যাকসিনের ফেজ-থ্রি ট্রায়াল।
গত ১৮ জুন সেচেনভ বিশ্ববিদ্যালয়ে এটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু হয়। বিশ্বে প্রথম তারাই স্বেচ্ছাসেবকদের উপরে করোনা প্রতিরোধী ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করল বলে দাবি সেচেনভ বিশ্ববিদ্যালয়ের। করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে আশাবাদী রুশ প্রশাসনও।