শুক্রবার সকালে হুগলির শ্রীরামপুরের মাহেশে মহাসমারোহে পালিত হল জগন্নাথ দেবের ৬২৪ তম স্নানযাত্রা । এদিন পঞ্জিকা মেনে সকাল প্রায় সাড়ে ৮টা নাগাদ মাহেশ জগন্নাথ মন্দিরের গর্ভগৃহে করা হল প্রভুর স্নানযাত্রা । করোনা আবহে এবার পাশে স্নানপিড়ির মাঠে মন্দির থেকে প্রভুজগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রাকে নিয়ে আসা হয় নি । এরপর প্রথা মেনে সম্পন্ন করা হয় স্নানযাত্রার অনুষ্ঠান । বাংলা সাহিত্যের অন্যতম পুস্তক হুতুম পেঁচার নকশা বই থেকে জানা যায় আগে মাহেশে জগন্নাথ দেবের স্নানযাত্রা উপলক্ষে আগের দিন কলকাতা থেকে বড় বড় বজরা, পিনেস, কলের জাহাজ ও নৌকা ভাড়া করে পুণ্যার্থীরা এখানে আসতেন । যদিও বর্তমানে এই সবই অতীতের স্মৃতিতে পরিণত হয়েছে ।এদিন ২৮ ঘড়া গঙ্গা জল ও দেড় মন দুধ দিয়ে প্রভু জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রাকে স্নান করানো হয় ।
#jagannathdev#snanjatra2020🙏 pic.twitter.com/8cq5sVILTA
— aamarsakal.com (@aamarsakal) June 5, 2020
এদিনের স্নানযাত্রা প্রসঙ্গে শ্রীরামপুর মাহেশ জগন্নাথ মন্দিরের প্রধান সেবাইয়েত সৌমেন অধিকারী জানান, প্রথা মেনে ভাদ্র মাসে সাড়াসাড়ি বানের সময় গঙ্গা থেকে ২৮ ঘড়া গঙ্গা জল তুলে রাখা হয় । এদিন তুলে রাখা ২৮ ঘড়া গঙ্গা জলের সাথে দেড় মন দুধ মিশিয়ে প্রভু জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রাকে স্নান করানো হয় । পুরাণ অনুযায়ী এদিন সন্ধ্যায় প্রভু জগন্নাথের জ্বর আসে । তাই প্রভুর গায়ে লেপ কম্বল চাপা দেওয়া হয় । আর প্রভুর জ্বর আসার সাথে সাথেই এদিন থেকে সাধারণ মানুষের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয় মূল মন্দিরের দরজা । প্রভু জগন্নাথ দেবকে সুস্থ করে তোলাআর জন্য মেদিনীপুর থেকে নিয়ে আসা হয় কবিরাজমশাইকে । আর এই কবিরাজ মশাইয়ের তৈরি করা ওষুধ বা পাচন খেয়েই নয় দিন বাদে সুস্থ হয়ে ওঠেন প্রভু জগন্নাথ । প্রভু সুস্থ হয়ে ওঠার সময় থেকেই শুরু হয় বিশেষ পুজা পাঠ । যদিও সাধারণ মানুষের জন্য মূল মন্দিরের দরজা খোলা হয় স্নানযাত্রার ১৫ দিন বাদে অর্থাৎ রথযাত্রার ঠিক একদিন আগে । স্নানযাত্রা থেকে রথের আগের দিন পর্যন্ত এই এক পক্ষকাল সময়কে বলা হয় অনবসর । এই সময় প্রভুকে ভোগ হিসেবে দেওয়া হয় শাবু । রথের আগের দিন প্রভু জগন্নাথকে মন্দিরের বাইরে আনার পাশাপাশি তাঁকে রাজবেশ পড়ানো হয় । এই অনুষ্ঠানকে প্রভু জগন্নাথের নবযৌবন বলা হয় । নবযৌবনের পরের দিন রথে চেপে প্রভু জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রা মাসীর বাড়ি যান ।