নির্দেশ ছিল এবছর পুরীতে ঘুরবে না মহাপ্রভুর রথের চাকা। কিন্তু ভক্তদের কথা মাথায় শেষ পর্যন্ত রথযাত্রার কয়েক ঘন্টা আগেই শর্তসাপেক্ষে পুরীর রথযাত্রায় সায় দিল সুপ্রিম কোর্ট। কেন্দ্র, রাজ্য এবং মন্দির কমিটির সমন্বয়ে রথযাত্রা হতে পারে বলে এ দিন জানিয়ে দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদে।
বিশবব্যাপী করোনা মহামারীর আতঙ্কে কয়েক দিন আগেই পুরীর রথযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল শীর্ষ আদালত। সেই রায় পুনর্বিচারের আবেদন করে কেন্দ্রীয় সরকার এবং ওড়িশা সরকার। একই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও আরও কয়েকটি সংগঠন। এ দিন তার প্রেক্ষিতেই শেষ পর্যন্ত রথযাত্রার উৎসবে ছাড় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
#JaiJagannath#supremecourt#orders#withconditions#forrathjatra#puri#jagannathdham🙏💗😔 pic.twitter.com/V9OjTHUHei
— aamarsakal.com (@aamarsakal) June 22, 2020
আগামীকাল ২৩ জুন রথযাত্রা। ওই দিন থেকেই পুরীতে শুরু হয় উৎসব। ওই দিন প্রভু জগন্নাথ যাবেন গুন্ডিচা বাড়ি। ফিরবেন উল্টোরথের দিন। ১০-১২ দিন ধরে চলা এই উৎসবে লক্ষ লক্ষ মানুষের জোয়ারে ভেসে যায় শ্রীক্ষেত্র। এবছর করোনা পরিস্থিতিতে গুরুত্ব বিবেচনা করে রথযাত্রা পিছিয়ে দেওয়ার আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে একটি মামলা দায়ের হয়। জনস্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখেই কার্যত রথযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করে শীর্ষ আদালত। এরপর সেই রায় পুনর্বিবেচনার জন্য আদালতে আবেদন করা হয়। প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে এ দিন মামলাটি শোনেন। সঙ্গে ছিলেন বিচারপতি এএস বোপান্না এবং দীনেশ মাহেশ্বরী। তবে পুরী ছাড়া আর কোথাও রথযাত্রা হবে না বলে পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন বিচারপতিরা। জনস্বাস্থ্য নিয়েও কোনওরকম আপোষ করা যাবে না বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্র, রাজ্য এবং পুরীর মন্দির কমিটিকে নিজেদের মধ্যে সমন্বয় রক্ষা করে কাজ করতে বলা হয়েছে। রাজ্যের গাইডলাইন মেনেই উৎসব পালন করা হবে বলে জানিয়েছে মন্দির কমিটিও।
এদিন কেন্দ্রের তরফে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা শীর্ষ আদালতে বলেন, ‘‘রথযাত্রার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে কোটি কোটি মানুষের বিশ্বাস। যদি প্রভু জগন্নাথ আগামিকাল না বেরিয়ে আসতে পারেন তা হলে প্রথা মেনে আগামী ১২ বছর তিনি আর বেরোতে পারবেন না।’’ কেন্দ্র শীর্ষ আদালতকে এ-ও জানিয়েছে, সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে রাজ্য প্রয়োজনে কার্ফু জারি করতে পারে। নির্দিষ্ট বিধিনিষেধ মানার আশ্বাসও দেওয়া হয় আদালতকে।
তুষার মেহতা আরও বলেন, ‘‘শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে চলে আসা একটি প্রথা এ ভাবে বাধাপ্রাপ্ত হতে পারে না। একমাত্র করোনা রোগী নন এমন এবং জগন্নাথ মন্দিরের কর্মীরা এই উৎসবে যোগ দিতে পারেন।’’ এ দিন শর্তসাপেক্ষে রথযাত্রায় অনুমতি দিয়েছে কেন্দ্রও।