করোনা আবহে লকডাউন শেষে বাঙালিকে এবার ভালো ইলিশ খাওয়ানোর আশা দেখিয়েছেন মৎস্য বিশেষজ্ঞরা। কারণ লকডাউনের কারণে দূষণ কমা, ছোট ইলিশের চোরাশিকার বন্ধ থাকা প্রভৃতি কারণে এবার সমুদ্র মোহনায় ইলিশ মাছের প্রাচুর্যের আশা করছেন মাছশিকারীরা। বিশেষজ্ঞদের আশ্বাস, এবারে অনেক বেশি পরিমাণে বড় মাপের ইলিশের দেখা মিলবে সাগরে।
একদিকে যখন ইলিশ নিয়ে আশায় বুক বাঁধছে বাঙালি তখনই আর এক আশঙ্কার কথাও শোনাচ্ছেন মৎস্যজীবীরা। ইলিশের দেখা মিললেও আদূর ভবিষ্যতে বাঙালিকে রুই-কাতলার দেখা পেতে হাপিত্যেশ করতে হতে পারে। এখনই খুচরো বাজারে বড় রুই-কাতলার দাম বেশ চড়া। আগামী দু-তিন মাসের মধ্যে তা আরও চড়তে পারে। এমনকি দাম দ্বিগুণও হতে পারে রুই-কাতলার! এরকমই আশঙ্কার কথা শোনাচ্ছেন মাছচাষিরা।
মীনাখাঁ, মোহনপুর, সন্দেশখালি অঞ্চলের মাছ চাষি ও মাছ ব্যাবসায়ীদের বক্তব্য, এপ্রিল আর মে মাস হল মাছের বংশবৃদ্ধির সময়। সেইসময়ই লকডাউন থাকায়, মাছ চাষিরা কেউ চারা মাছ তৈরি করতে এবং মাছের ডিম ফোটাতে পারেনি।
করোনার কারণে ২ মাসের বেশি লকডাউনের সময় মাছ চাষও হয়নি। এমনকি এই অঞ্চল থেকে বাংলা তথা ভারতের পূর্বাঞ্চলের বেশ কিছু জায়গায় মাছের ডিমপোনা সরবরাহ করা হয়। প্রথমে লকডাউন, আর মাঝেই আমফানের ফলে মাছের ডিমপোনা তৈরির সুযোগও মেলেনি চাষিদের। এমনকি রুই-কাতলার পাশাপাশি চিংড়ির যোগানও চল্লিশ শতাংশ কমার আশঙ্কা করছেন মাছচাষি ও ব্যবসায়ীরা। কারণ এক্ষেত্রেও চিংড়ির মীনের অভাব। তাই সংশ্লিষ্ট মহলের আশঙ্কা আগামিদিনে মাছের আকাল হবে এই রাজ্যে।
প্রসঙ্গত, এখনই একটু বেশি ওজনের রুই-কাতলা কেজি প্রতি ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরো বাজারে। সাধারণ সময়ে যে মাছ ১৫০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হত। এবার অক্টোবর ও নভেম্বরে বড় মাছের যোগান আরও কমবে বাজারে। ফলে মাছের আকাল হওয়ার জন্য দামও দ্বিগুণ হবে বলে জানাচ্ছেন মাছ চাষিরা।
অন্যদিকে ইতিমধ্যেই লক্ষ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে, এই বিশাল পরিমাণ ক্ষতি তাঁরা কী করে সামাল দেবেন, সেই চিন্তায় রাতের ঘুম ছুটেছে মাছ চাষি থেকে মৎস্য ব্যবসায়ীদের।