২১ দিনের লকডাউন আরও বাড়তে পারে বলে যে খবর রটেছিল, সে বিষয় সম্পূর্ণ নস্যাৎ করে দিল কেন্দ্রীয় সরকার। এক বিবৃতিতে কেন্দ্রের তরফে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আগামী ২১ দিনের লকডাউন আর বাড়বে না। এক্ষেত্রে ভুয়ো খবর ছড়ানোর জন্য মিডিয়ার একাংশ দায়ী বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। ক্যাবিনেট সেক্রেটারি এমন খবর অস্বীকার করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, এ গুলি সব ভিত্তিহীন।’ পাশাপাশি ক্যাবিনেট সচিব রাজীব গৌবাও সোমবার সকালে বলেন, ‘এই খবর দেখে আমি বিস্মিত। লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধির কোনও পরিকল্পনা নেই।’ উল্লেখ্য, করেনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায়, অনেকেই মনে করেছিলেন আরও লকডাউনের মেয়াদ বাড়তে পারে। কিন্তু সোমবার সকালে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে এই খবরের কোনো সত্যতা নেই।
রবিবারই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন যে আমেরিকায় শাট ডাউনের মেয়াদ বাড়িয়ে ৩০ এপ্রিল করা হচ্ছে। ভারতেও বহু মানুষের ধারণা ও আশঙ্কা হল, ২১ দিনের যে লক ডাউন ঘোষণা করেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার তার মেয়াদ আরও বাড়ানো হতে পারে। কিন্তু সংবাদসংস্থা এএনআই জানাচ্ছে, এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে সোমবার সকালে ক্যাবিনেট সচিব রাজীব গৌবা বলেছেন, “এ সব খবর শুনে আমিই বিষ্মিত হয়ে যাচ্ছি, লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানোর ব্যাপারে কোনও প্ল্যান নেই।”
এদিন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরোর তরফেও বলা হয়েছে যে, “এ ব্যাপারে কিছু সংবাদমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে ও গুজব ছড়িয়েছে। কিন্ত ক্যাবিনেট সচিব জানিয়েছেন এ সব কথার কোনও ভিত্তি নেই।”
দেশ জুড়ে যে লক ডাউন শুরু হয়েছে তা যাতে স্বতঃস্ফূর্ত ও সর্বাত্মক হয় সে ব্যাপারে কেন্দ্র মোদী সরকার বারবার আবেদন জানাচ্ছেন দেশবাসীকে। গতকাল রবিবার মন কি বাত অনুষ্ঠানেও প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, নিজের ও পরিবারের মঙ্গলের জন্যই মানুষের উচিত ঘরের চৌকাঠের বাইরে পা না রাখা। কারণ, সংক্রমণের শৃঙ্খল এতেই ভাঙা সম্ভব হবে। রাজ্য সরকারগুলিও লক ডাউন পরিস্থিতি বজায় রাখার জন্য যথাসাধ্য করছে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের কর্তারা বলছেন, ভারত এখন খুব স্পর্শকাতর পরিস্থিতিতে রয়েছে। লক ডাউনের মাধ্যমে সংক্রমণ শৃঙ্খল ভেঙে এখন সরকারের কাজ হল করোনাভাইরাসের ইতিমধ্যে যাঁরা সংক্রামিত হয়েছেন তাঁদের খুজে বের করা। কারও শরীরের এ ধরনের উপসর্গ দেখা দিলে বা সন্দেহ হলে তক্ষুণি পরীক্ষা করা। করোনার সংক্রমণ তাঁর দেহে ধরা পড়লে তাঁকে অন্যান্যদের থেকে বিচ্ছিন্ন করে আইসোলেশনে রাখা। এই প্রক্রিয়া যত দ্রুত ও সুচারুভাবে করা যাবে তত দ্রুত ভারত এই সংক্রমণ মুক্ত হবে।
তবে পর্যবেক্ষকরা অনেকে বলছেন, ২১ দিনে লক ডাউন শেষ হলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সময় লাগতে পারে। খোদ ট্রাম্প এদিন বলেছেন, আমেরিকায় ১ জুন থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে তিনি আশা করছেন। মনে করা হচ্ছে, যে ব্রিটেন ও ইউরোপের অন্য দেশেও তার আগে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরবে না। বিশ্বায়নের যুগে ভারত এদের থেকে এখন আর বিচ্ছিন্ন নয়। ফলে এই দেশগুলিতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল, রফতানি বাণিজ্য সবই থমকে থাকবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।