নিজস্ব প্রতিনিধি : বিশ্বব্যাপী জরুরী অবস্থা ঘোষণা করার মতো এখন তেমন মারাত্মক আকর ধারণ করেনি করোনা ভাইরাস। গতকাল সকালের দিকে এমনই কতা জানিয়েছিলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থস (হু)। কিন্তু তার কিছুক্ষণের মধ্যে সরকারিভাবে জানা যায়, হু হু করে গোটা বিশ্বে মৃত্যু সংখ্যা আরও বেরে যাচ্ছে। শুধুমাত্র শুক্রবারই ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ২৫৯ জন। তবে তার মধ্যে এই রোগ থেকে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছে মোট ৩৪ জন।

এখনপর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী ২৫ জন মারা গেছে গোটা বিশ্বে। দেহে করোনাভাইরাস পাওয়া যাওয়া রোগীর সংখ্যা ৮৩০ জন। তাঁদের মধ্যে ১৭৭ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আরও ১৯৭২ জন একই উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রয়েছেন হাসপাতালে। আর এই পরিস্থিতি সামাল দিতে চিনের ইউহান-সহ মোট ৫টি শহরে সমস্ত সরকারি পরিবহন ব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শুধুমাত্র ইউহান প্রদেশে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে ৬৩০ জনেরও বেশি মানুষ।

চিকিৎসকদের মতে, উহান শহরের সি-ফুড ও মাছ ও মাংসের বাজার থেকে ভাইরাসটি ছড়িয়েছে। এই বাজারে বিভিন্ন বন্যপ্রাণীর মাংস বেআইনিভাবে বিক্রি হত। এই দেশের সাড়ে ৬ শো’র বেশি মানুষ আক্রান্ত এই রোগে। দেখা গিয়েছে, বিদেশে আক্রান্তদের বেশির ভাগ চিন-ফেরত। সর্বশেষ খবরটি এসেছে সিঙ্গাপুর থেকে। এর পরেই ভাইরাসের ‘উৎস’ উহান, হুয়াংগ্যাং ও ইঝৌ শহরকে ‘লকডাউন’ ঘোষণা করা হয়েছে।

গত কাল মধ্যরাতে ট্রেন-সহ সরকারি পরিবহণ ব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়া হয়। বন্ধ সিনেমা হল, সাইবার কাফে, বাজার-দোকানও। রাতের দিকে আরও দু’টি শহরকে ‘বন্দি’ ঘোষণা করা হয়। ট্রেন-বিমানের পাশাপাশি ফেরি, বাস চলাচলও বন্ধ। এই সব শহরের স্টেশনগুলিতে নামানো হয়েছে সেনা-পুলিশ। স্টেশনের প্রবেশ পথে গার্ডরেল বসানো হয়েছে।

বেজিঙের ভারতীয় দূতাবাস একটি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ‘চিনের পরিবর্তিত পরিস্থিতির দিকে আমরা খুব কাছ থেকে নজর রাখছি। এই নিয়ে WHO-এর পরামর্শও মেনে চলছি। উহানের বাসিন্দাদের খাদ্য সরবরাদ-সহ সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।’
চিনে করোনাভাইরাসর প্রাদুর্ভাবের পর হুবেই প্রদেশ থেকে ভারতীয়রা এবং ভারতের আত্মীয়-স্বজনেরা খোঁজ খবর শুরু করেছেন। সেই কারণে দূতাবাস দুটি হটলাইন খুলেছে। +8618612083629 ও +8618612083617। উহান ও তিনের অন্যান্য জায়গা থেকে মুম্বই ফেরার পর দু জনকে শহরের একমাত্র আইসোলেশন ফেসিলিটি থাকা কস্তুরবা হাসপাতালে নজরদারির জন্য রাখা হয়েছে। ইতোমধ্যেই এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে সিঙ্গাপুর ও ভিয়েতনামে।

সৌদি আরবে কর্মরত এক ভারতীয় নার্সের দেহেও করোনাভাইরাস মিলেছে। ভারতের বিদেশ প্রতিমন্ত্রী ভি মুরলীধরন খবরের সত্যতা স্বীকার করে জানিয়েছেন, আক্রান্ত নার্স জেড্ডার আসির ন্যাশনাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। করোনাভাইরাসে আক্রান্তের যেন দ্রুত চিকিৎসা হয় তা নিশ্চিত করার জন্য বিদেশমন্ত্রীকে এস জয়শঙ্করকে চিঠি লিখেছেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন।