আমার সকাল : ভারতীয়দের ফোন হ্যাক, WhatsApp-কে নোটিস কেন্দ্র সরকারের

নিজস্ব প্রতিনিধি : ফেসবুকের পর এবার হ্যাকারদের নিশানায় ছিল হোয়াটসঅ্যাপ। ভারতে হোয়াটসঅ্যাপ ইউজারদের উপর নজরদারির চেষ্টা চালাচ্ছিল ইজরায়েল। বৃহস্পতিবার স্বীকার করে নিল কর্তৃপক্ষ। এক্ষেত্রে মূলত সাংবাদিক, সরকারি আধিকারিক এবং মানবাধিকারকর্মীদের টার্গেট করা হয়েছিল। এদিকে, সংবাদমাধ্যমে গোটা বিষয়টি সামনে আসার পরে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই বিষয়ে ৩ দিনের মধ্যে হোয়াটসঅ্যাপকে ব্যখ্যা করতে বলা হয়েছে।

মনে করা হচ্ছে, ‘ভয়েস কলিং’ ফিচার ব্যবহার করে নির্দিষ্ট ব্যক্তির মোবাইল সেটে নজরদারি সফটওয়্যার ইনস্টল করে দিচ্ছে হ্যাকাররা। ফলে গোপন ও ব্যক্তিগত তথ্য নিমেষে চলে যাচ্ছে বিদেশি সংস্থার হাতে। হোয়াটঅ্যাপের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ইজরায়েলের সাইবার নিরাপত্তা সংক্রান্ত ওই সংস্থা এনএসও গ্রুপের স্পাইওয়্যারল ‘Peagasus’ ব্যবহার করে চারটি মহাদেশের ২০টি দেশের প্রায় ১৪০০ ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্টে আড়ি পতারা চেষ্টা করা হয়েছিল। হ্যাকারদের নিশানায় রয়েছে ভারতের একাধিক নেতা-মন্ত্রী, সাংবাদিক, আইনজীবী, সমাজকর্মীদের মতো বিশেষ কিছু পেশার মানুষজন।

কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ টুইট করে বলেছেন, “ভারতীয়দের হোয়াটস্অ্যাপের গোপনীয়তা রক্ষার জন্য কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে সেটা আগামী তিন দিনের মধ্যে জানাতে হবে কর্তৃপক্ষকে। এই ম্যালওয়ারকে নষ্ট করতে দ্রুত ব্যবস্থা নিক হোয়াটসঅ্যাপ। ” ভারত সরকার এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, ভারতের সাইবার বিশেষজ্ঞদের কাছে উন্নতমানের প্রটোকল রয়েছে। রাজ্য ও কেন্দ্রের নেতা-মন্ত্রী ও বিশেষ ব্যক্তিদের সুরক্ষা দেওয়াটা আমাদের কর্তব্য।
মনে করা হচ্ছে, চলতি বছরের এপ্রিলের শেষ থেকে মে মাস পর্যন্ত টানা দু’সপ্তাহ ভারতীয় সাংবাদিক এবং নেতাকর্মীর হোয়াটস অ্যাপের উপর নজরদারি চালানোর চষ্টা করা হয়েছে। হোয়াটসঅ্যাপের সুরক্ষা প্রযুক্তি সেটা ধরে ফেলে। ফলে শেষ পর্যন্ত ওই সংস্থার চেষ্টা সফল হয়নি। এনএসও-র বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের কথা জানিয়েছে হোয়াটসঅ্যাপ। পাশাপাশি যাঁদের অ্যাকাউন্ট হ্যাক করার চেষ্টা করা হয়েছিল, তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছে। যদিও ভারতে কাদেরকে টার্গেটে করা হয়েছিল সে বিষয়ে হোয়াটসঅ্যাপ কোনও মন্তব্য করেনি।

হোয়াটস্অ্যাপের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, হামলার ধরন দেখে এটা নিশ্চিত, আড়ি পাতার সফটওয়্যারটি তৈরি করেছে ইজ়রায়েলের সাইবার সুরক্ষা সংস্থা ‘এনএসও গ্রুপ’ এবং ‘কিউ সাইবার টেকনোলজি।’ সাইবার বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এই সংস্থাই একসময় বানিয়েছিল কুখ্যাত ‘পেগাসাস’ সফটওয়্যার, যা যে কোনও মোবাইলে আড়ি পাততে সক্ষম। পেগাসাসের বৈষিষ্ট্য হল এরা গ্রাহককে ‘exploit link’-এ ক্লিক করতে বাধ্য করে। একবার এই লিঙ্কে ক্লিক করলে সেই গ্রাহকের মোবাইলের সুরক্ষা কবচ তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে। এরপরেই একজন ব্যক্তির অজান্তেই ব্যবহারকারীর মোবাইল, কম্পিউটার বা ল্যাপটপে ঢুকে তাঁর পাসওয়ার্ড, কনট্যাক্ট লিস্ট বা ফোন নম্বরের তালিকা, ক্যামেরা, ছবি-সহ প্রায় সব তথ্যই হাতিয়ে নেওয়া যায়। হোয়াটসঅ্যাপের ক্ষেত্রে যা ভিডিও কলের সময় ঢোকার চেষ্টা করে।

 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন