পল্লব ঘোষ
পুলিশ দেখলেই অনেকেরই মনে পড়ে টিভি পর্দায় দেখা লন্ডন পুলিশের নানা ছবি। অনেকেই আবার বলতে শুরু করেন ব্রিটিশ পুলিশ নাকি খুব কড়া। কিন্তু খোদ লন্ডন পুলিশের কাছে থেকেই এবার প্রশাংসা কুড়িয়ে নিল কলকাতা পুলিশ।শুধু তাই নয় লালবাজারে ফোন করে পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান মুরলীধর শর্মাকে ধন্যবাদ জানিয়ে লন্ডনের পুলিশের কমিশনার। কিন্তু কেন?
সেই উত্তর খুঁজে বার করতে গিয়ে জানা গেল, কলকাতায় বসে লন্ডনের একের পর এক বাসিন্দাকে প্রতারণা। লন্ডন পুলিশের কাছে হওয়া ২৩ হাজার অভিযোগের কিনারা করেছেন শহরের পুলিশকর্তারা। আর এই কাজ যে খুব একটা সহজ ছিল না তা ভালোই জানেন লালবাজারে কর্তারা।
পুলিশ জানিয়েছে, কলকাতার দু’টি জায়গায় ভুয়ো কলসেন্টার তৈরি করে কলকাতায় বসে বিদেশি নাগরিকদের প্রতারণা করা হচ্ছে।এই খবর পৌছায় লালবাজারে। তদন্ত শুরুর আগেই বহুজাতিক কম্পিউটার নির্মাতা সংস্থার ভারতীয় অংশের এক কর্তা দিল্লি থেকে লালবাজারে জানান যে, তাঁদের ওই আন্তর্জাতিক সংস্থার নাম করে কলকাতা থেকে বেশ কয়েকজন লন্ডন ও বিদেশের অন্য কয়েকটি জায়গায় ফোন হয়। তাঁদের কম্পিউটারে ভাইরাস ঢোকানোর হুমকিও দেওয়া হয়।
কিছু ক্ষেত্রে ভাইরাস ঢুকিয়ে তাঁদের কম্পিউটারের সিস্টেম বিগড়ে দেওয়ার পর বলা হয়, পর্যাপ্ত টাকা পেলে তারাই তা সারিয়ে দেবে। এভাবে শুধু লন্ডনের ২৩ হাজার বাসিন্দাকে প্রতারণা করা হয়।সেই মতো কলকাতাকে প্রতারনার উৎসস্থল হিসাবে দেখিয়ে লন্ডন পুলিশের কাছে জমা হয় ২৩ হাজার মামলা।সেই কথা লালবাজারে পৌছাতেই তৎপর হয়ে ওঠেন শহরের দুঁদে পুলিশ অফিসাররা।
ব্যাপারটি গুরুত্ব দিয়ে বিচার করে লালবাজারের সাইবার থানার পুলিশ তদন্ত শুরু করে তপসিয়া রোড (সাউথ) ও রফি আহমেদ কিদওয়াই রোডে দু’টি কলসেন্টারের সন্ধান পান। মোট সাতজনকে গ্রেপ্তার করার পর এই অপরাধের কিনারা হয়। জানা যায়, কয়েক কোটি টাকা প্রতারণা করেছে অভিযুক্তরা।এর পরই লন্ডনের পুলিশ কমিশনার ক্রেসিডা ডিক লালবাজারে ফোন করেন। লন্ডন পুলিশের কাছে দায়ের হওয়া হাজার হাজার অভিযোগের কিনারা করার জন্য কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দাপ্রধান মুরলীধর শর্মাকে ধন্যবাদ জানান লন্ডনের পুলিশ কমিশনার।