নিজস্ব প্রতিনিধি— দিন যত এগোচ্ছে ভারতবর্ষে আর্থিক ঘাটতি ততই বেড়েই চলছে। এই ঘাটতি নিয়ন্ত্রণ রাখা নিয়ে একপ্রকার হুঁশিয়ারির সঙ্গে মন্তব্য করলেন আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল আইএমএফ–এর মুখ্য গীতা গোপীনাথ। তাঁর বক্তব্য, রাজস্ব আদায়ের সম্ভাবনা যতই উজ্জ্বল থাকুক না কেন, ভারতকে তার আর্থিক ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে রাখতেই হবে। বুধবার বিশ্ব অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আইএমএফ বার্ষিক বৈঠকে বসছে বিশ্বব্যাঙ্কের সঙ্গে। তার আগে এই ভারতের অর্থনৈতিক বিষয় নিয়ে এমনই মন্তব্য করলেন গীতা।
গীতা গোপীনাথ জানাচ্ছেন, বিশ্ব অর্থনীতির ক্ষেত্রে মন্দা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু ভারতের ক্ষেত্রে ব্যাঙ্ক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর দুর্বলতা এবং সার্বিকভাবে ঋণ নেওয়ার অনীহা একটা খারাপ প্রভাব ফেলেছে অর্থনৈতিক বৃদ্ধির ওপর। ব্যক্তিগত গ্রাহক থেকে শুরু করে ছোট ও মাঝারি শিল্প উদ্যোগ, সবাই ঋণ নেওয়া বন্ধ করেছে। তার একটা সম্মিলিত প্রভাব পড়ছে জাতীয় অর্থনীতিতে। এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন সম্প্রতি যেসব ব্যবস্থা নিয়েছেন, তার প্রশংসাই করেছেন গীতা গোপীনাথ। কিন্তু ভারতের সামনে এই মুহূর্তে যে সব অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ রয়েছে, সে সবের মোকাবিলা করতে হলে আরও অনেক কিছু করার আছে।
চারদিন পর কুলটির অবৈধ খনিতে উদ্ধার হল তিনজনের দেহ
তিনি বলেন, সবার আগে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলোর হিসেবের খাতা সাফসুতরো করতে হবে। তিনি আরও জানান, আইএমএফ-এর তথ্য অনুযায়ী ২০২০ সালে ভারতের অর্থনৈতিক বৃদ্ধি ৭ শতাংশ ছাড়াতে পারে, কিন্তু তা পুরোটাই নির্ভর করছে ব্যাঙ্কগুলোর জমা–খরচের পরিস্থিতি কতটা শুধরোয়, অনুৎপাদিত সম্পদ কতটা পুনরুদ্ধার করা যায়, সেই জট কাটিয়ে ওঠার ওপর। আইএমএফ মনে করছে, ভারত যতটা দ্রুত এবং যত ব্যাপক উন্নতি করবে বলে বাকি বিশ্ব ভেবেছিল, ততটা হয়ত হচ্ছে না, কিন্তু আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির তুলনায় ভারতের উন্নতির হার এখনও বেশ ভাল। ভারতের মতো বড় ও জনবহুল দেশের পক্ষে ৬% বৃদ্ধির হার যথেষ্ট ভাল বলতে হবে।
ভারত সরকারের পক্ষ থেকে আর্থিক ক্ষেত্রে কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যেমন কর্পোরেট করের হার কমানো। এতে সুফল পাওয়া যাচ্ছে। বাড়ছে রাজস্ব আদায়ও। কিন্তু নিশ্চিন্ত থাকলে হবে না। আর্থিক ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে রাখতেই হবে। কর্পোরেট কর কমানোর ফলে যে রাজস্ব ঘাটতি হবে, তা কী করে পূরণ করা হবে, সরকারকে ভাবতে হবে।