নিজস্ব প্রতিনিধি : ভালোবাসা সব সময় সুখের হয় না। কখনো কখনো তা হয়ে ওঠে শোকের কারণ। আবার অতিরিক্ত ভালোবাসাই কাল হয়ে দাঁড়ায় সংসার জীবনে। তখন ভালোবেসে যাই করেন সব কিছুই হয়ে উঠতে পারে বিরক্তির কারণ!
অতিরিক্তি ভালবাসার কারণে স্বামীর বিরুদ্ধে আদালতে দারস্ত স্ত্রী। সব সময় এত বেশি ভালোবাসে যে আমি আর পারছিলাম না। কখন একটুও ঝগড়াও করে না। কিন্তু, নিরুত্তাপ এই জীবন ক্রমশই যেন অসহনীয় উঠেছিল ওই মহিলার কাছে। বাধ্য হয়ে তাই আদালতে বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন জানালেন তিনি। অভূতপূর্ব এই ঘটনাটি ঘটেছে সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর ফুজাইরা এলাকার শরিয়া আদালতে।
আরব আমিরশাহীর ফুজাইরা ওই মহিলা জানিয়েছেন , ‘আমাদের বিয়ের পর থেকে কোন দিনও কোন কারণে একটুও ঝগড়া হয়নি। তাই আমি সবসময় প্রার্থনা করতাম যেন একদিনের জন্য হলেও অশান্তি হয়। ও আমাকে বকাবকি করে। কিন্তু, কোনওদিনই সেই স্বপ্ন সফল হয়নি। ফলে নিরুত্তাপ অবস্থাতেই কেটে যাচ্ছিল আমার জীবন। কেমন যেন দমবন্ধ করা পরিবেশের মধ্যে কাটছিল দিনগুলো। বাধ্য হয়ে আদালতের দ্বারস্থ হই। বিচ্ছেদের আবেদন জমা দিই।’
ওই মহিলার আবেদন শুনে হতবাক হয়ে যান বিচারক। আদালতে দাখিল করা আবেদনে ওই মহিলা জানান, এক বছর আগে বিয়ে হয়েছিল তাদের। বিয়ের পর থেকে তার প্রতি স্বামীর ভালবাসা দেখে আপ্লুত হয়ে উঠেছিলেন তিনি। কিন্তু ক্রমশ তা দমবন্ধ পরিস্থিতির সামিল হয়ে উঠে। তিনি বলেন, বিয়ের পর থেকে একটা দিনও আমাদের ঝগড়া হয়নি। তাই আমি সবসময় প্রার্থনা করতাম যেন একদিনের জন্য হলেও অশান্তি হয়। ও আমাকে বকাবকি করুক। কিন্তু, কোনোদিনই এমনটা হয়নি। স্বামীর ভালোবাসায় বিরক্ত ওই স্ত্রী জানান, স্বামীকে রাগানো কিংবা ঝগড়া করার নানা চেষ্টা করেছেন তিনি। কিন্তু স্বামী সবসময়ই তাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন এবং উপহার দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি এরকম ঝামেলামুক্ত বাধ্যবাধকতার জীবন চাই না। কেমন যেন দমবন্ধ হয়ে আসছে । এ কারণে বিবাহ বিচ্ছেদে আবেদন করেছি।’ স্ত্রী বিচ্ছেদ চাওয়ায় অবাক হয়েছেন ওই স্বামী।
অন্যদিকে স্বামী বলেছেন, ‘আমি তো কিছু খারাপ করিনি। একজন আদর্শ ও ভদ্র স্বামী হওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। একবার আমার স্ত্রী শরীরের ওজন নিয়ে আপত্তি তুলেছিল। তাই ডায়েট চার্ট মেনে খাবার খেয়ে ও ব্যায়াম করে শরীরের মেদ ঝড়িয়ে ছিলাম। তাছাড়া আমার মনে হয় বিয়ের প্রথম বছরেই সম্পর্ক গভীরতা ঠিক বোঝা যায় না। আরও কিছুটা সময় দেওয়া প্রয়োজন। কারণ, প্রতিটি মানুষই তাঁদের ভুল থেকে শেখে।’
এই ঘটনা শুনে বিচারক হতবাক হয়ে গেছেন। কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত দেননি তিনি। উভয়পক্ষের বক্তব্য শোনার পর আরো কিছুদিন ওই দম্পতি একসঙ্গে থাকার নির্দেশ দিয়েছে দেশটির স্থানীয় বিচারক।