নিজস্ব প্রতিনিধি : প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে সরিয়ে পরিচালক রাজ চক্রবর্তীকে কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবের অ্যাডভাইজারি কমিটির চেয়ারম্যান করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চেয়ারম্যান পদ থেকে প্রসেনজিৎকে সরানো হলেও অ্যাডভাইজারি কমিটির সদস্য পদে এখনও তাঁকে রাখা হয়েছে।
আজ শুক্রবার বিকেলে দিল্লিতে যখন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ঘোষণা হচ্ছে, নবান্নেও তখন আলোচনার বিষয় সিনেমা। এ দিন বিকেল পাঁচটা নাগাদ ২৫তম কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবের অ্যাডভাইজারি কমিটি ঘোষণা করে নবান্ন। এ ব্যাপারে সরকারি বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করা হয়।
দিন কয়েক আগেই অবশ্য শোনা গিয়েছিল, চলচ্চিত্র উৎসবের প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরছেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। এপ্রসঙ্গে যদিও অফিশিয়ালি কোনও ঘোষণা হয়নি। তবে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে যে চলচ্চিত্র উৎসব কমিটির চেয়ারম্যান পদ থেকে সরানো হতে পারে সেই আশঙ্কা ছিল। তাই দু’দিন আগে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, যদি আমাকে এই কমিটির চেয়ারম্যান পদ থেকে সরানো হয় তা হলে যেন আমাকে আগের থেকে জানানো হয়। এমনকী প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় আরও জানিয়েছিলেন, এর আগের বারে কমিটির চেয়ারম্যান পদ থেকে সরানো হয়েছিল টলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়কে। কিন্তু সাবিত্রী তাঁকে নাকি বলেছিলেন, “তোকে কমিটির চেয়ারম্যান কার হল, সেটা ভাল কথা। কিন্তু আমাকে ওরা কেনো কিছু জানালও না। আমাকে একবার বলতে পারত। এটা কি আমার সাথে ঠিক হল।”
তবে এর মাঝেই শোনা গেল নতুন চেয়ারম্যান পদ পেতে পারেন পরিচালক রাজ চক্রবর্তী। গতবছরই আনুষ্ঠানিকভাবে কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছিল প্রসেনজিতের হাতে। এছাড়া বিগত ১০ বছর ধরে চলচ্চিত্র উৎসবের কমিটির সদস্য হওয়ার সুবাদে নিয়মিত মিটিংয়ে উপস্থিতও থেকেছেন অভিনেতা। কিন্তু ইদানিং তিনি নানা কাজে ব্যস্ত। তাই জন্য কমিটির কোনও মিটিংয়ে উপস্থিত থাকতে পারছেন না, এমনটাই জানিয়েছিলেন প্রসেনজিৎ। এছাড়া, অরূপ এবং স্বরূপ বিশ্বাস আয়োজিত একটি বৈঠকে আর্টিস্ট ফোরামকে আমন্ত্রণ জানানো হলে প্রসেনজিতের নেতৃত্বাধীন ফোরাম তাতে উপস্থিত থাকতে নাকচ করে দেয়। জল্পনার শুরু হয় সেখান থেকেই। তখনই আন্দাজ করা গিয়েছিল যে এই পদে টলিউডের নতুন কোনও মুখ দেখা যেতে পারে। এবার সেই পদের জন্যই রাজ চক্রবর্তীকে নির্বাচন করা হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে।
অন্টযদিকে, লিউডের অনেকের মতে, গোটা ঘটনার নেপথ্যে রাজনীতি থাকার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। গত কিছুদিন ধরেই রটে গিয়েছিল যে প্রসেনজিৎ বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের সঙ্গে দেখা করেছেন। তার পর পরই আবার চিটফান্ড কাণ্ডে জেরা করার জন্য প্রসেনজিৎকে ডেকেছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। স্বাভাবিক ভাবেই অনেকে এ জন্য দুয়ে দুয়ে চার করেছেন। যদিও প্রসেনজিৎ-এর বক্তব্য, বিজেপি-তৃণমূল সহ রাজনৈতিক শিবিরের অনেকের সঙ্গেই তাঁর ব্যক্তিগত পরিচয় রয়েছে। তাঁরা তাঁকে গুরুত্ব দেন।
এছারাও অপর্ণা সেনকে এ বার অ্যাডভাইজারি কমিটির সদস্য করা হয়েছে। সম্প্রতি গণপিটুনির ঘটনা নিয়ে কেন্দ্রে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে অতিশয় সরব হয়েছেন অপর্ণা।