ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের পদে প্রথম ভারতীয় বংশোদ্ভূত মোদি অনুরাগী প্রীতি

নিজস্ব প্রতিনিধি— একটা ইঙ্গিত ছিল। সেটাই সত্যি হলো। প্রথম ভারতীয় বংশোদ্ভূত হিসাবে নজির গড়লেন প্রীতি পটেল। ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পদে তাঁকে নিয়োগ করল বরিস জনসন সরকার।

বাকিংহাম প্রাসাদে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের কাছে ইস্তফাপত্র জমা দিয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে থেকে বিদায় নিয়েছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে। বরিস দায়িত্বে আসার পর পরই পদত্যাগ করেছেন ১২ জন মন্ত্রী। কনজারভেটিভ পার্টির অন্দরে গুঞ্জন ছিলই নতুন করে ক্যাবিনেট সাজাতে পারেন বরিস। সে ক্ষেত্রে বরিস-ক্যাম্পেনের অন্যতম মুখ প্রীতি পটেলের গুরুত্বপূর্ণ পদ পাওয়াটা মোটেই আশ্চর্যের নয়।

৪৭ বছর বয়সী এই রাজনীতিবিদ একসময় ব্রিটেন পার্লামেন্টের সদস্য ছিলেন। ২০১০ সালে এসেক্সের উইথহাম থেকে সাংসদ হন তিনি। বরিস জনসনকে প্রধানমন্ত্রী চেয়ে তাঁর হয়ে রাজনৈতিক কর্মসূচিও পালন করেন। বলা হয়, বরিস ক্যাম্পেনের তিনি অন্যতম মুখ। একটা সময়ে ব্রিটেনের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন দফতর-সহ বিদেশ সংক্রান্ত বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ দফতরের ভার ছিল তাঁর উপর। ব্রিটিশ বিদেশ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রীও হয়েছিলেন প্রীতি। পরে পার্লামেন্টের নিয়ম ভেঙে ইজরায়েলের দুই উচ্চপদস্থ আধিকারিকের সঙ্গে গোপনে বৈঠক করার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। সমালোচনার মুখে পড়ে বিদেশ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে তিনি ইস্তফা দেন তিনি।

কনজারভেটিভ নেত্রী প্রীতির পরিবার আদতে গুজরাতের বাসিন্দা। ষাটের দশকে পটেল পরিবার লন্ডনে চলে আসে। ১৯৭২ সালে জন্ম হয় প্রীতির। হ্যারোতে বেড়ে ওঠা। ওয়াটফোর্ডে পড়াশোনা। এসেক্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর। তার পর যোগ দেন ব্রিটিশ রাজনীতিতে। ২০১০ সালে কনজারভেটিভদের হয়ে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন প্রীতি। প্রথম বারেই জয়। তখন থেকেই ক্যামেরনের আস্থাভাজন হয়ে উঠতে শুরু করেন প্রীতি। ব্রিটেনে আয়োজিত ভারতের নানা অনুষ্ঠানে দেখা যায় তাঁকে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অনুরাগী বলেই পরিচিত প্রীতি পটেল।

২০১৩ সালে ক্যামেরনের ভারত সফরের সময় তাঁর সফরসঙ্গী ছিলেন প্রীতি। কলকাতা এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখাও করেছিলেন সেই সময়। ২০১৪ সালে ভারতে লোকসভা নির্বাচনের সময় ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের একাংশ যখন তৎকালীন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে তুলোধোনা করছে, সে সময় রুখে দাঁড়ান প্রীতি। ফলে ভারতীয় তথা এশীয়দের ভোট টানার ক্ষেত্রে প্রীতি বরাবরই ছিলেন ‘এক্স ফ্যাক্টর।

ব্রেক্সিট নিয়ে অচলাবস্থার সময় বরিস জনসনের প্রধানমন্ত্রী হওয়া যথেষ্টই তাৎপর্যপূর্ণ। সংকট সমাধানে থেরেসা মে ব্যর্থ হওয়ার পর দায়িত্ব এখন বরিসের কাঁধে। দায়িত্ব নিয়েই ৯৯ দিনের মধ্যে ব্রেক্সিট সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন বরিস। এবার পরীক্ষায় কতটা উত্তীর্ণ হতে পারেন নতুন প্রধানমন্ত্রী সে দিকেই তাকিয়ে ব্রিটেনবাসী।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন