নিজস্ব প্রতিনিধি : ষষ্ঠ দফার নির্বাচন শেষ হয়েছে কিন্তু স্বস্তিতে থাকতে পারছে না কোনও রাজনৈতিক দল। টানটান উত্তেজনা আর উদ্বেগের মধ্যে রয়েছে ঝাড়্গ্রাম লোকসভা কেন্দ্রের শাসক ও শাসক বিরোধী বিজেপির প্রার্থী থেকে শুরু করে নেতাকর্মীরা। যদিও ভোট দানের পর বিজেপি ও তৃণমুলের প্রার্থী এবং নেতাকর্মীরা জেতার ব্যাপারে একশো ভাগ নিশ্চিত বলে জানিয়েছেন। কিন্তু দু-পক্ষ কখনো জয়ী হতে পারে না। তাই ভোটের শেষ হাসি হাসবেন কে? তা জানতে আপতত অপেক্ষা করতে হবে ২৩ মে পর্যন্ত। বিজেপির নেতা কর্মীদের সমীক্ষা অনুযায়ী তারা অনেক এগিয়ে শাসক দলের থেকে। কারণ মোদী ম্যাজিক সব চেয়ে বেশি কাজ করেছে ঝাড়্গ্রাম জেলায়। একেবারে যুব সমাজ বা নতুন ভোটার দের সব ক’টি ভোট বিজেপির বাক্সে পড়েছে বলে দাবি বিজেপি নেতৃত্বের। এছাড়াও পঞ্চায়েত ভোটের নিরিখে হিসেব করেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। সেক্ষেত্রেও গোপীবল্লপুর, নয়াগ্রাম, ঝাড়্গ্রাম, বিনপুর, সাঁকরাইল এলাকায় যথেষ্ট ভোট পেয়েছে বিজেপি। তাই লোকসভা ভোটে পরাজয়ের কোনও কারণ দেখছে না বিজেপি। যদিও তাদের মনে একরকম, চোখে মুখে সংশয়ের ছাপ থাকলেও তা প্রকাশ করতে নারাজ বিজেপি। অন্যদিকে শাসক দলের সমীক্ষা গত সাত বছরে জঙ্গলমহলে যা উন্নয়ন হয়েছে তা গত ৩৪ বছরে হয়নি। এই উন্নয়নকে হাতিয়ার করে প্রথম থেকেই ভোট যুদ্ধের ময়দানে নেমে ছিল শাসক দলের নেতাকর্মীরা। পাশাপাশি তৃণমূলের বক্তব্য পঞ্চায়েত ভোটে সিপিএমের একটা বড় অংশের ভোট বিজেপির ঝুলিতে পড়েছিল। এবারের সিপিএম প্রার্থী দিয়েছেন। সেই ভোট আর বিজেপি পাবে না। তৃণমূলের আরও দাবি বিজেপি গত পাঁচ বছরে বেকার ছেলেমেয়েদের জন্য একটিও কর্মসংস্থান করেনি। সে তুলনায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হাজার হাজার ছেলে মেয়ের কর্মসংস্থান সুনিশ্চিত করেছেন। পুলিশ, প্রাইমারি শিক্ষক, আপার প্রাইমারিতে চাকুরী পেয়েছে কয়েক হাজার ছেলে মেয়ে। তাই প্রার্থী নয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখের দিকে তাকিয়ে ভোট দিয়েছেন জঙ্গলমহলের জনতা। তবে শাসক ও বিরোধী দলের নেতা কর্মীরা মুখে বড় বড় বুলি বললেও জেতার ব্যাপারে তাদের প্রত্যেকের মনে একটা বড় সংশয় রয়েছে। আনাচে কানাচে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে কি হবে। আমরা জয়ী হতে পারবো তো? এবার ঝাড়্গ্রাম লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল, বিজেপি, সিপিএম সহ মোট নয়টি রাজনৈতিক দল প্রার্থী দিয়েছিল। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মত সিপিএম, ঝাড়খণ্ড ও আদিবাসী সমন্বয় মঞ্চ সহ রাজনৈতিক দলের ভোট কাটাকুটিতে আখেরে লাভ হবে শাসক দলের। তাই আর বলার বিশেষ কিছু অপেক্ষা থাকে না। এবারের লোকসভা নির্বাচনে শেষ হাসি হাসবেন বিরবাহা সরেন।এব্যাপারে তৃণমূলের ঝাড়্গ্রাম জেলা কোর কমিটির চেয়ারম্যান সুকুমার হাঁসদা একশো ভাগ নিশ্চিতের সাথে বলেন জিতবো আমরা। আমি জঙ্গলমহলের পাড়ায় ঘুরেছি। মানুষজনের সাথে কথা বলেছি। মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নের কথা তাদেরকে শুনিয়েছি। কুড়মি ভোট কি ফ্যাক্টর হবে এই বিষয়ে তিনি বলেন এখানে সামাজিক সংগঠন কোনও ফ্যাক্টর না। সামাজিক সংগঠনে শুধু একটা রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীরা থাকে না।অন্যদিকে বিজেপির প্রার্থী কুনার হেম্ব্রম ও বিজেপির জেলা সভাপতি সুখময় শতপথী বলেন, উন্নয়ন বলতে সেঅর্থে কিছুই হয়নি জঙ্গলমহলে। বেলপাহাড়ীতে এখনো পর্যন্ত জলের জন্য মানুষ হা হা কার করছে। ঝাড়্গ্রাম থেকে জলের ট্যাঙ্কে জল পাঠাতে হচ্ছে। কৃষিক্ষেত্রে উন্নতি হয়নি। জঙ্গলমহলের মানুষজন তৃণমূল ছেড়ে এবার বিজেপিতে যোগদান করেছেন।