নিজস্ব সংবাদদাতা: রক্তাত্ব হয়েছে শ্রীলঙ্কা। রবিবার কয়েক মিনিটের ব্যবধানে ছ’টি বিস্ফোরণ। তার দু’ঘণ্টার মধ্যে আরও দু’টি। রবিবার ইস্টার প্রার্থনার সেই দুঃস্বপ্ন কাটিয়ে ওঠার আগেই ফের বিস্ফোরণ আতঙ্ক শ্রীলঙ্কায়। সোমবারও কলম্বোর একটি চার্চের কাছে একটি গাড়িতে রাখা বোমা ফেটে যায়। কলম্বো সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ডে মিলেছে অন্তত ৮০টিরও বেশি ডিটোনেটর। সব মিলিয়ে আতঙ্ক যেন আরও গ্রাস করেছে দ্বীপ রাষ্ট্রকে। সেই কারণেই সোমবার সকালে কার্ফু তুলে নেওয়ার পর আজ মধ্যরাত থেকে জারি হচ্ছে জাতীয় জরুরি অবস্থা। ধারাবাহিক বিস্ফোরণে নিহতদের স্মরণে ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ-সহ গোটা বিশ্বেই শুরু হয়েছে প্রার্থনা। কিন্তু এত বড় বিস্ফোরণের নেপথ্যে কারা? কোনও গোষ্ঠী এখনও দায় স্বীকার না করলেও কলম্বোর দাবি, মূল চক্রী জঙ্গি গোষ্ঠীকে চিহ্নিত করে ফেলেছেন তদন্তকারীরা। ইতিমধ্যেই এই গোষ্ঠীর মোট ২৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও দাবি শ্রীলঙ্কার। তবে সেদেশের প্রশাসনের তরফে জানা গিয়েছে,এই জঙ্গিদের পিছনে আন্তর্জাতিক কোনও গোষ্ঠীর সমর্থন রয়েছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হয়েছে।

অন্যদিকে,কলম্বোয় ধারাবাহিক বিস্ফোরণকাণ্ডের নেপথ্যে স্থানীয় ইসলামিক জঙ্গি সংগঠন এনটিজে৷ ঘটনার প্রায় দেড়দিন পর প্রাথমিক তদন্তে এমনই জানিয়েছেন শ্রীলঙ্কা প্রশাসনের মুখপাত্র রাজিতা সেনারত্নে৷ ন্যাশনাল তৌহিদ জামাত নামে এই জঙ্গিগোষ্ঠীই এমন ভয়াবহ হামলা ঘটিয়েছে বলে অনুমান৷ সোমবার ঘটনার পর থেকেই দেশজুড়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে৷ এদিন প্রেসিডেন্ট বিবৃতি জারি করে তা ঘোষণা করেছেন৷তদন্তে উঠে এসেছে আরও বেশ কয়েকটি বিষয়৷ কীভাবে বিস্ফোরণ হল, তার একটা রূপরেখা পেয়েছেন তদন্তকারীরা৷ চিত্রনাট্যের মতোই সুনিপুণ সেই অপারেশন৷ কলম্বোর বিখ্যাত সিনামন গ্র্যান্ড হোটেলে শনিবার রাতে চেক-ইন করেছিল মহম্মদ আজম নামে এক যুবক৷ রবিবার সকালে, ইস্টার সানডে-তে ভিড়ে ঠাসা হোটেলের লবিতে হাতে প্লেট নিয়ে প্রাতরাশের লাইনে দাঁড়িয়েছিল৷ তার আগেই অবশ্য শরীরে আত্মঘাতী বোমা বেঁধে নিয়েছিল সে৷ প্লেটে খাবার দেওয়ার ঠিক আগের মুহূর্তেই বিস্ফোরণ ঘটায় সে৷ ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় তার নিজের শরীরও৷ সেই দেহাংশ থেকেই ফরেনসিক নমুনা সংগ্রহ করেছেন তদন্তকারীরা৷ জানা গিয়েছে, যুবক সিংহলি৷ 
হোটেলে চেক ইনের সময়ে যে ঠিকানা দিয়েছিল, তা পুরোপুরি ভুয়ো৷তবে ভয়াবহ এই বিস্ফোরণের পরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, এলটিটিই পরবর্তী সময়ে দ্বীপরাষ্ট্রে কি সন্ত্রাসের মাথা হয়ে উঠছে এনটিজে?