নিজস্ব প্রতিনিধি : রক্তাত্ব হয়েছে শ্রীলঙ্কা। ২১ এপ্রিল রবিবার পরপর ৮টি বিস্ফোরণে কার্যত তছনছ হয়ে গিয়েছিল শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বো। ওই বিস্ফোরণে অন্তত ৩২১ জন নিহত হন। আহত হয়েছেন প্রায় ৫০০ জন। প্রতিবেশী দেশে নিহত হয়েছেন ১০ জন ভারতীয়ও।

ঘটনার প্রায় ৪৮ ঘণ্টা পার শ্রীলঙ্কায় ধারাবাহিক বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করে নিল ইসলামিক স্টেট (আইসিস)। তারা একটি ভিডিও প্রকাশ করে জানিয়েছে, এই রক্তাক্ত দিন শ্রীলঙ্কাবাসীকে উপহার দিয়েছে।

গত ১৫ মার্চ নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের একটি মসজিদে হামলা হয়। নিহত হন অন্তত ৫০ জন। ওই হামলার পাল্টা হিসেবেই শ্রীলঙ্কার গির্জা হামলা চালানো হয়। মঙ্গলবার সকালের দিকেই এই দাবি করেছিলেন শ্রীলঙ্কার জুনিয়র ডিফেন্স মিনিস্টার রুয়ান বিরজেবারদেনে। কিন্তু পাল্টা বলে শ্রীলঙ্কা প্রশাসন দাবি করলেও, এর কোনও যুক্তি বা প্রমাণ পেশ করতে পারেনি তারা।

শ্রীলঙ্কা প্রশাসনের প্রাথমিক ভাবে অনুমান ছিল যে, এই হামলার পিছনে রয়েছে স্থানীয় ইসলামি জঙ্গি সংগঠন ন্যাশনাল তৌহিত জামাত (এনটিজে)। আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আইসিস-এর সঙ্গে এর যোগ রয়েছে বলেও জানায় শ্রীলঙ্কার গোয়েন্দা বিভাগ। শেষ পর্যন্ত কলম্বো বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেট অফ সিরিয়া অ্যান্ড ইরান বা আইসিস।
আইসিস-এর নিজস্ব নিউজ পোর্টাল ‘আমাক’-এ হামলার দায় স্বীকার করেছে তারা। জানিয়েছে, নিউজিল্যান্ডের দু’টি মসজিদ জঙ্গি হানার বদলা নিতেই শ্রীলঙ্কায় হামলা চালিয়েছে তাদের সংগঠন।
https://twitter.com/faisalirshaid/status/1120638580353839106
news.com-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, ‘আমাক’ চ্যানেলের টেলিগ্রাম অ্যাপে একটি ভিডিও আপলোড করেছে আইসিস। অনুমান, ‘আল গুরাবা’ মিডিয়ার তরফে এই ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে। যেখানে দুই জঙ্গিকে শ্রীলঙ্কাবাসীর উদ্দেশে বলতে শোনা গিয়েছে, “এই রক্তাক্ত দিন তোমাদের উপহার দিলাম।“ আইসিস এই হামলার দায় স্বীকার করার পরেই প্রকাশ্যে এসেছে বেশ কয়েকটি নাম। আবু উবাদিয়া, আবুল বররা এবং আবুল মুখতার—–এই তিন জঙ্গিই ইস্টার সানডে’র হামলায় যুক্ত ছিল বলে অনুমান করছে কলম্বো পুলিশ।

শ্রীলঙ্কার ধারাবাহিক বিস্ফোরণের ১০ দিন আগে সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন কলম্বো-র পুলিশ প্রধান জয়সুন্দরা। আইএস-এর একটি শাখা সংগঠনের তরফে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিয়ো ছড়িয়ে দেওয়া হয়। তাতে আইএসের পতাকার সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় আব্দুল বর্রা, আব্দুল মুখতার এবং আবু উবেইদা নামের তিনজনকে। তারাই শ্রীলঙ্কায় হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করা হয় ওই ভিডিয়োয়। তার পর থেকেই হামলায় তাদের হাত থাকার সম্ভাবনা জোরালো হচ্ছিল। কিন্তু তার পরেও কেন উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি তাই নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে।