নিজস্ব সংবাদদাতা: সকাল ৮টা ৪৫ মিনিট। শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোর তিনটি গির্জায় চলছিল ইস্টারের প্রার্থনা। হঠাৎ করেই জোরালো বিস্ফোরণ। একটি নয়, পরপর ছ’টি। তিনটি গির্জা ও তিনটি হোটেলে ধারাবাহিক বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল কলম্বো। মুহূর্তের মধ্যে চারদিকে মানুষের আর্তনাদ, রক্ত। সংবাদসংস্থা এএফপি-র খবর অনুযায়ী মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ১৫৬। তবে এখনও লাফিয়ে বাড়ছে নিহতের সংখ্যা।

কলম্বোর ন্যাশনাল হাসপাতালের মুখপাত্র ডা সামিধি সামারাকুন জানিয়েছেন, হাসপাতালে ৩০০ জন ভর্তি রয়েছেন। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ৩৫ বিদেশি নাগরিক। রাজধানী কলম্বোয় মৃত্যু হয়েছে ৪৫ জনের, উত্তর কলম্বোর নেগোম্বর এরটি গির্জায় বিস্ফোরণে মারা গিয়েছেন ৬৭ জন এবং বাট্টিকালোয়ার একটি গির্জায় বিস্ফোরণে মৃত্য হয়েছে ২৫ জনের।জানা গিয়েছে সকাল ৮টা ৪৫ মিনিট নাগাদ কলম্বোর সেন্ট অ্যান্থনিস চার্চে প্রথম বিস্ফোরণ হয়। এই বিস্ফোরণের রেশ কাটতে না কাটতে কাটুয়াপিটিয়ার সেন্ট সেবাস্টিয়ান চার্চ ও কোচ্চিকাডের একটি গির্জায় পরপর বিস্ফোরণ হয়।

এই তিনটি গির্জাতেই সেই সময় ইস্টারের প্রার্থনা চলছিল। প্রার্থনা শুনতে স্থানীয় মানুষদের সঙ্গে অনেক পর্যটকও যোগ দিয়েছিলেন।এই তিনটি গির্জা ছাড়াও কলম্বোর তিনটি প্রথম সারির হোটেল দ্য শাংগ্রি লা, সিনামন গ্র্যান্ড ও কিংসবিউরি হোটেলেও হয় জোরালো বিস্ফোরণ। জানা গিয়েছে বিস্ফোরণের তীব্রতা একটাই বেশি ছিল যে গির্জার ছাদ উড়ে গিয়েছে। লণ্ডভণ্ড হয়ে গিয়েছে পুরো এলাকা। সাধারণভাবে রবিবার গির্জায় বিশেষ প্রার্থনা হয়ে থাকে।

এদিন ইস্টার উপলক্ষ্যে বিশেষ প্রার্থনা হওয়ার কথা ছিল। ফলে গির্জাগুলি ছিল ভিড়ে ঠাসা। কলম্বো পুলিসের মুখপাত্র রুয়ান গুণশেখর সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, সকাল পৌনে নটা নাগাদ প্রথম বিস্ফোরণের খবর পাওয়া যায়। একটি বিস্ফোরণ হয়েছে কোচ্চাইকাদেরে।এখনও কোনও জঙ্গি সংগঠন এই হামলার দায় স্বীকার করেনি।

পরিস্থিতির ভয়াবহতা বুঝে জরুরি বৈঠক ডেকেছেন সেদেশের প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংঘে৷এদিকে এই বিস্ফোরণে কোনও ভারতীয় আহত কিংবা নিহত হয়েছেন কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। শ্রীলঙ্কার এই বিস্ফোরণের তীব্র নিন্দা করেছেন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিংঘে৷ টুইট করে বিস্ফোরণে নিহতদের পরিবারকে সমবেদনা জানিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী, রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।