জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত সেই কাজটাই সুনিপুনভাবে পালন করে গেলেন বিখ্যাত কৌতুক অভিনেতা ব্রিটিশ কমেডিয়ান ইয়ান কগনিটো।

বিদেশঃ মানুষ কে হাসানোর কারিগর ছিলেন তিনি।জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত সেই কাজটাই সুনিপুনভাবে পালন করে গেলে গেলেন বিখ্যাত কৌতুক অভিনেতা ব্রিটিশ কমেডিয়ান ইয়ান কগনিটো।ঘড়িতে তখন রাত  দশটা হবে।হাসি-মশকরায় ফেটে পড়ছে অক্সফোর্ড থেকে ১৪ মাইল উত্তরে বিস্টার শহরের অ্যাটিক বার।মঞ্চে দাঁড়িয়ে ‘লোক হাসাচ্ছিলেন’  —”ধরুন যদি এই আপনাদের সামনেই মরে যাই।” বলতে বলতেই বুকে হাত দিয়ে চেয়ারে বসে পড়েন তিনি। হেসে কুটিপাটি খাচ্ছেন দর্শক। বিবর্ণ চোখ-মুখ থরথর করে কাঁপছে সারা শরীর।সবাই ভাবছেন জীবনের সেরা অভিনয় করছেন শিল্পী।আর ওটাই তাঁর স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গি।কিন্তু মিনিট কয়েক পরেই নিথর হয়ে যায় তাঁর শরীর।বিস্ময়ের ঘোর কাটিয়ে উঠতে যেটুকু সময়,হইচই পরে যায় দর্শকের মধ্যে। সঙ্গে সঙ্গে আসে অ্যাম্বুলেন্স , আসেন চিকিত্‍সক।দর্শকদের মধ্যে উপস্থিত এক চিকিত্‍সক সিপিআর দেওয়া শুরু করে দিয়েছিলেন। জানা  যায় মঞ্চেই মৃত্যু হয়েছে ষাটোর্ধ্ব কৌতুকাভিনেতার।বৃহস্পতিবার রাতের এই ঘটনায় শোকস্তব্ধ ব্রিটেনের শিল্পীমহল।যারা কৌতুক শিল্পী হন তাঁদের ব্যাক্তিগত জীবন নিয়ে আমাদের খুব একটা ধারনা থাকেনা।সিনেমা মঞ্চ বা থিয়েটার সব ক্ষেত্রেই কথাটা সত্যি।আমাদের দেশে  ও এমন অনেক প্রতিভাবান শিল্পীর খুব নির্মম পরিনতি হয়েছে।

প্রিয় অভিনেতার এমন মৃত্যু বিশ্বাস করতে পারছেন না কগনিটো-ভক্তরাও। সে দিন মঞ্চে দাঁড়িয়ে মজা করছিলেন তিনি। রসিকতা করছিলেন হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক নিয়ে। কগনিটোর কৌতুক উপভোগ করছিলেন অ্যাটিক বারের মালিক রায়ান মোল্ডও। তিনিও অনুষ্ঠান উপভোগ করছিলেন। অনুষ্ঠানের মাঝপথ। মজা করতে-করতে আচমকাই বসে পড়েন কগনিটো। মাথা কাত হয়ে যায়, দু’হাত এলিয়ে পড়ে পিছনে। কাঁপতে থাকে কাঁধ। অনুষ্ঠানের সঞ্চালক অ্যান্ড্রু বার্ডও বলেন, সবাই ভেবেছিলেন, কগনিটো মজা করছেন। জানালেন, মঞ্চে ওঠার আগেই অভিনেতা তাঁকে বলেছিলেন, শরীরটা খুব একটা ভাল নেই। কিন্তু অনুষ্ঠান করবেনই। বার্ড বলেন, ”খুব জোরে কথা বলেন উনি। আমি ভাবছি মজা করছেন। একটু আগেও মৃত্যু নিয়ে রসিকতা করেছেন। দর্শকদের মতো আমিও ভাবছিলাম অভিনয়। যখন ওঁর কাছে ছুটে যাচ্ছি, তখনও ভাবছিলাম এই বুঝি তেড়েফুঁড়ে উঠে আমাকে চমকে দেবেন।

কগনিটোর আসল নাম পল বারবিয়েরি। লন্ডনে জন্ম। আশির দশক থেকে কৌতুকাভিনয় করছেন। সে দিন দর্শকাসনে ছিলেন তাঁর গুণমুগ্ধ জন অস্টোজ্যাক। বললেন, ”মিনিট দশেক আগে স্ট্রোক নিয়ে মজা করছিলেন উনি। বলছিলেন, ‘ভাবুন আমার স্ট্রোক হয়েছে’। কী খারাপ লাগছে। বসে-বসে সবটা দেখলাম। আর হেসে গেলাম!”

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন