প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী তথা কংগ্রেস সভাপতি রাজীব গান্ধির শহিদ বেদি ভাঙা নিয়ে হুলুস্থুল বাধল হাওড়ায়। স্থানীয়দের অভিযোগ বাকসাড়ার তৃণমূল ব্লক সভাপতি বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন। অভিযুক্ত ব্লক সভাপতির দাদার প্রোমোটারি ব্যবসা আছে। ভেঙে দেওয়া শহিদ বেদীর কাছেই তিনি একটি বহুতল তৈরি করছেন। ইমারতি দ্রব্য নিয়ে যাওয়া লরির পথ সুগম করতেই ওই বেদি ভাঙা হয়েছে বলে অভিযোগ। যদিও এই ঘটনায় তৃণমূল কংগ্রেসের সরাসরি কোনও যোগ নেই বলে জানা গিয়েছে। উপরন্তু বেদি ভাঙার প্রতিবাদে কংগ্রেস কর্মীদের সঙ্গে সামিল হতে দেখা গিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদেরও।
প্রসঙ্গত, একদা কংগ্রেস কর্মী তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর ঘরে এখনও দেখা যায় রাজীব গান্ধির ছবি। এখনও তাঁর প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রদ্ধা যে অটুট এই একটি বিষয়েও তা পরিষ্কার। কিন্তু সেই তাঁরই দলের এক নেতার এহেন কাজে ক্ষোভ ছড়িয়েছে বাকসাড়া এলাকায়।
স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, শহিদ বেদি ভাঙার প্রতিবাদ করায় শুক্রবার সন্ধ্যা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এলাকায় তাণ্ডব চালায় অভিযুক্ত ব্লক সভাপতির দাদা ওই প্রোমোটারের অনুগত বাইক বাহিনী। এই ঘটনায় নিষ্ত্রিয়তার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় পুলিশের বিরুদ্ধেও। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ঘটনাস্থল থেকে ৩০ মিটার দুরে পুলিশ ফাঁড়ি থাকলেও পুলিশ কোনও ববেস্থা নেয়নি। এমনকি ১০০ নম্বরে ফোন করেও সাহায্য মেলেনি। যদিও হাওড়া জেলা তৃণমূল সভাপতি অরূপ রায় বলেন, ‘‘শহিদ বেদি ভাঙায় দলের যে নেতার নাম উঠেছে তাঁকে শো কজ় করা হবে। দলীয় স্তরে খোঁজখবর করা হচ্ছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পুলিশকেও বলেছি।’’
#kashmiranantanag#sahidshyamalkumardey#remembering#sacrificeforcoutrymother#offeringrespect#ministersubhenduadhikary🙏🇨🇮🌱🇨🇮❤🇨🇮🌾 pic.twitter.com/YX2rxAJqg3
— aamarsakal.com (@aamarsakal) July 5, 2020
প্রসঙ্গত, প্রায় তিরিশ বছর আগে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর এই শহিদ বেদি যাঁরা তৈরি করেছিলেন তাঁদের অনেকেই এখন তৃণমূলে। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, তৃণমূলের ব্লক সভাপতি নিজেই লোকজন নিয়ে এসে শুক্রবার দুপুরে বেদিটি ভাঙা শুরু করেন। সেইসময় স্থানীয়দের প্রতিবাদে সাময়িকভাবে কাজ বন্ধ রাখা হয়। কিন্তু তারপরেই সশস্ত্র দুষ্কৃতীদের হামলায় গুরুতর আহত হন জেলা কংগ্রেস নেতা শুভ্রজ্যোতি দাস ও রঞ্জিত দেবনাথ। এরপর কংগ্রেস ও তৃণমূল কর্মীরা রাস্তা অবরোধ করলে আবার হামলা চালানো হয়। দ্বিতীয়বারের হামলায় ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের কার্যকরী সভাপতি অজয় মুখোপাধ্যায় ও অলোক চট্টোপাধ্যয়-সহ বেশ কয়েক জন তৃণমূল কর্মীও জখম হয়েছেন বলে অভিযোগ।
আক্রান্ত তৃণমূল কর্মীদের অভিযোগ, পুলিশের সামনেই সশস্ত্র দুষ্কৃতীরা যখন তরোয়াল নিয়ে হামলা চালয় তখনও পুলিশ নিষ্ক্রিয় ছিল। যদিও হাওড়ার পুলিশ কমিশনার কুণাল আগরওয়ালের বক্তব্য, খবর পাওয়ার পরেই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনায় এখনও র্পযন্ত ২ জন গ্রেফতার হয়েছে।
এদিকে বেদি ভাঙার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন তৃণমূলের অভিযুক্ত ব্লক সভাপতি। তিনি বলেন, ‘‘আমি বেদিটি ভেঙেছি, পাশেই একটি নতুন বেদি তৈরি করে দেব। কিন্তু দুষ্কৃতীদের সঙ্গে আমার সর্ম্পক নেই।’’