সিএএ রাজনীতি মমতাকেই শরণার্থী করে দেবে, তোপ অমিতের।

বিজেপি’র ভার্চুয়াল সভায় মঙ্গলবার দিল্লি থেকে রাজ্যের শাসকদলকে নিশানা করলেন অমিত শাহ। এদিনের ‘জনসংবাদ র‌্যালি’ থেকে শাহ সওয়াল করলেন এ রাজ্যেও রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের জন্য। এদিন তাঁর নিশানায় ছিল রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও। এছাড়া আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পে সায় না দেওয়ার মতো বিষয়ে রাজ্য কেন্দ্রের সঙ্গে সহযোগিতা করছে না এবং এর ফলে যে রাজ্যের সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষরাই বঞ্চিত হচ্ছেন তা নিয়েও অভিযোগ করেন বিজেপি’র সর্বভারতীয় এই নেতা।
একই সঙ্গে দুর্নীতির অভিযোগেও রাজ্যের শাসকদলকে বিঁধেছেন তিনি। গত ৬ বছরে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের কাজের খতিয়ান পেশ করে তাঁর দাবি রাজ্যও গত ১০ বছরের কাজের হিসাব দিক।
এদিন ‘জনসংবাদ র‌্যালি’ থেকে বাংলায় রাজনৈতিক পরিবর্তনের পক্ষে সওয়াল করলেন অমিত শাহ। তাঁর বক্তব্য, ‘সোনার বাংলা’ গড়তে নরেন্দ্র মোদির হাত শক্ত করুক রাজ্যবাসী। তাঁর মত, ‘আপনারা সিপিএম ও তৃণমূলকে দেখেছেন, এ বার বিজেপিকে সুযোগ দিন’। তিনি বলেন, দেশে ৩০৩ আসন পেলেও আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাংলার ১৮টি আসন। এটা বাংলার মানুষের আশীর্বাদ, বিজেপির শক্তি।

এদিন কেন্দ্রের দেয় অর্থ নিয়েও রাজ্যের শাসকদলকে কটাক্ষ করেন অমিত শাহ। কেন্দ্রের দেওয়া টাকা এরাজ্যে তোলাবাজ ও সিন্ডিকেট রাজের হস্তগত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়েও মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তোপ দাগেন অমিত শাহ। তিনি বলেন, পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরাতে সবচেয়ে কম ট্রেন নিয়েছে এরাজ্য।
এমনকি ‘শ্রমিক স্পেশাল’কে ‘করোনা এক্সপ্রেস’ বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিযায়ী শ্রমিকদের অসম্মান করেছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।।
এদিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আরও দাবি, রাজ্য সরকারকে ছাড়াও ১১ হাজার কোটি টাকা বাংলার মানুষকে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এছাড়াও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে অমিত শাহ বলেন, আপনি কৃষকদের সম্পর্কে তথ্য দিন। আমরা ৬ হাজার টাকা দিতে চাই।

এদিন সিএএ-এর সপক্ষেও গলা চড়াতে দেখা যায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হুঁশিয়ারি দিয়ে অমিত শাহ বলেন, বিরোধিতার ফল ভুগতে হবে আপনাকে। এ প্রসঙ্গে রাজনৈতিক ফয়দা তুলতেই মতুয়া সম্প্রদায়, নমশূদ্র ও বাংলাদেশ থেকে আসা মানুষের জন্য একপ্রকার দরদে উথলে উঠতেও দেখা যায় শাহকে।
বিজেপির উদ্দেশ্য, সামাজিক দূরত্ব মেনে বিভিন্ন পার্টি অফিস-সহ অন্যান্য জায়গায় ফেসবুক লাইভ করা। এ ভাবে প্রায় দু’লক্ষ মানুষকে যোগদান করানো সম্ভব হবে বলে আশা বিজেপি নেতৃত্বর। এর আগে, রবিবার বিহারে ‘জনসংবাদ র‌্যালি’-র ভার্চুয়াল সভায় বক্তব্য রেখেছিলেন অমিত শাহ। সোমবার, একইভাবে ওড়িশা ‘জনসংবাদ র‌্যালি’-তেও বক্তৃতা করেন তিনি। মহারাষ্ট্রে ‘জনসংবাদ র‌্যালি’ করেন রাজনাথ সিংহ।
২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে থেকে লকডাউনের আগে পর্যন্ত কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে সামনে রেখে এ রাজ্যে লাগাতার রাজনৈতিক কর্মসূচি চালিয়ে গিয়েছে বিজেপি। কিন্তু দেশ জুড়ে দীর্ঘ লকডাউন চলাকালীন পরিস্থিতির দিকেই নজর রেখেই তা সম্ভবপর হয়নি। তবে এখনও লকডাউন চলছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়টিও এর সঙ্গে ওতোপ্রোত ভাবে জড়িয়ে রয়েছে। তাই এই ভার্চুয়্যাল র‌্যালির আয়োজন করা হয়েছে।

 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন