বিশেষ বিমান পাঠিয়ে বিদেশে আটক প্রায় ১৫,০০০ ভারতীয়কে দেশে ফেরানোর পরিকল্পনা করেছে নয়াদিল্লি।

করোনাভাইরাসের কারণে লকডাউন প্রায় সারা বিশ্ব। বিশ্বেরি বিভিন্ন দেশে এই মুহূর্তে আটকে রয়েছেন বহু ভারতীয়। এরকম অবস্থায় বিশেষ বিমান পাঠিয়ে বিদেশে আটক প্রায় ১৫,০০০ ভারতীয়কে দেশে ফেরানোর পরিকল্পনা করেছে নয়াদিল্লি। বৃহস্পতিবার থেকেই শুরু হবে এই মিশন।
প্রসঙ্গত, স্বাধীনতার পরে বিদেশে আটক এত বড় সংখ্যক ভারতীয়কে ফিরিয়ে আনতে অভিযান হয়নি। মোট ১৩টি দেশে আটকে পড়া ১৪,৮০০ ভারতীয়কে ৬৪টি বিমানে করে ফিরিয়ে আনবে ভারত। এছাড়া পশ্চিম এশিয়া এবং মালদ্বীপ থেকেও তিনটি জাহাজে করে ফিরিয়ে আনা হবে আটক ভারতীয়দের। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া এই মিশনের প্রথম দিনেই ১০টি বিমানে ফেরানো হবে ২,৩০০ জন ভারতীয়কে।
প্রথম দিনে আমেরিকা, ফিলিপিন্স, সিঙ্গাপুর, বাংলাদেশ, সংযুক্ত আরব আমিরশাহী, ব্রিটেন, সৌদি আরব, কাতার, ওমান, বাহরিন এবং কুয়েত থেকে ভারতীয়দের ফিরিয়ে আনবে বিশেষ বিমান। দ্বিতীয় দিনে ৯টি দেশ থেকে ২০৫০ জন ভারতীয়কে নিয়ে চেন্নাই, কোচি, মুম্বই, অহমদাবাদ, বেঙ্গালুরু এবং দিল্লি ফিরবে বিশেষ বিমান। তৃতীয় দিনে আরও ১৩টি দেশ থেকে আটক ভারতীয়দের ফিরিয়ে আনা হবে।
এদিকে করোনা সঙ্কটে দেশে ফেরা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছে ভারতীয়দের মধ্যে। গত এক সপ্তাহে সেখানে বসবাসকারী ২ লক্ষ ভারতীয় দেশে ফিরতে চেয়েছেন। এজন্যে ভারতীয় দূতাবাসের ওয়েবসাইটে গিয়ে নিজেদের নাম নথিভুক্ত করেছেন তাঁরা। এক সঙ্গে এত মানুষ ভিড় করায়, সাময়িকভাবে ওয়েবসাইট বসে যায়।
এরপর এগিয়ে আসে ভারতীয় দূতাবাস। সেখানে বসবাসকারী ভারতীয়দের অনুরোধ করা হয়, তাড়াহুড়ো না করে ধীরে সুস্থে এগনোর। সতর্ক করা হয়, নাম নথিভুক্ত করাতে দূতাবাসে ছুটে আসার কোনও প্রয়োজন নেই। তাতে সামাজিক দূরত্ব বিঘ্নিত হতে পারে। দফায় দফায় বিপন্ন সকলকেই দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে।
আগামী ৭ মে থেকে দফায় দফায় ভিন্ দেশে আটকে পড়া ভারতীয়দের ফিরিয়ে আনা হবে বলে সোমবার একটি বিবৃতি প্রকাশ করে জানায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। তার জন্য বিমান ও নৌবাহিনীর জাহাজ পাঠানো হবে বলে জানানো হয়। এখনও পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ৭মে আবু ধাবি থেকে কোচি এবং দুবাই থেকে কোঝিকোড়ের উদ্দেশে রওনা দেবে দু’টি বিমান।
তবে বিমানে ওঠার আগে সমস্ত যাত্রীদের মেডিক্যাল স্ক্রিনিং করা হবে। তাতে করোনার উপসর্গ নেই এমন মানুষদেরই উঠতে দেওয়া হবে বিমানে। দেশে ফেরার পরও ফের পরীক্ষা হবে তাঁদের। তার পর ১৪ দিনের জন্য কোয়রান্টিনে রাখা হবে। তবে দেশে ফেরা থেকে কোয়রান্টিনে থাকা, সব পরিষেবার জন্যই টাকা নেওয়া হবে ওই সব মানুষদের কাছ থেকে। তাঁদের কোথায় রাখা হবে, নিরাপত্তার জন্য কী কী ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন, তা ঠিক করবে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের সরকার।
তবে দেশে ফেরানোর ক্ষেত্রে শিশু, গর্ভবতী মহিলা, বৃদ্ধ, ঠিকা শ্রমিক এবং যাঁদেপ ভিসার মেয়াদ পেরিয়ে গিয়েছে, তাঁদেরই প্রাধান্য দেওয়া হবে।
অন্য দিকে, মলদ্বীপ থেকে ভারতীয়দের ফেরাতে ইতিমধ্যেই রওনা দিয়েছে নৌবাহিনীর একটি জাহাজ। প্রথম দফায় ম্যালে থেকে ২০০ যাত্রীকে নিয়ে কোচি ফিরবে সেটি। সমুদ্রপথে তাতে সময় লাগবে ৪৮ ঘণ্টা। তার সমস্ত খরচও যাত্রীদেরই দিতে হবে। জলপথে যাত্রীদের ফিরিয়ে আনার জন্য, আইএনএস জলাশ্ব, আইএনএস শার্দুল এবং আইএনএস মগরকে পাঠানো হচ্ছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন