উহান শহর তখন একটু একটু করে তলিয়ে যাচ্ছে মহামারীর গ্রাসে। ওই শহরের বিখ্যাত লেখিকা ফ্যাং ফ্যাং। তিনি ভাবলেন, চারপাশে যা দেখছেন, লিখে রাখবেন। অনলাইনে শুরু করলেন লেখালিখি। তার নাম দিলেন ‘উহানের ডায়েরি’। আর এই উহানের ডাইরি ক্রমশ বিক্যাত হয়ে উঠলো। বিশ্ব জুড়ে কোটি কোটি মানুষ পড়েছে সেই বিবরণ। বহু দেশের প্রকাশকরা লেখাগুলি অনুবাদ করে ছাপার ব্যবস্থা করেছেন। ২০২০ সালে বিশ্ব জুড়ে কীভাবে করোনা মহামারী শুরু হয়েছিল, তার নিখুঁত বর্ণনা আছে তাতে। কিন্তু অনেকেই বেজায় চটে গিয়েছে ফ্যাং ফ্যাং-এর ওপরে। তাদের ধারণা, অনলাইনে লিখে ফ্যাং ফ্যাং চিনের শত্রুদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছেন। ফ্যাং ফ্যাং-এর বয়স ৬৪। তিনি ২০১০ সালে সাহিত্যে চিনের সবচেয়ে সম্মানজনক পুরস্কারটি পেয়েছিলেন। অতিমহামারী নিয়ে লেখায় তিনি সরকারের সমালোচনা করেছেন। আর এনিয়ে মৃত্যু ধমকিও শুনতে হচ্ছে এই লেখিকাকে। উহান শহরে ১ কোটি ১০ লক্ষ মানুষ বাস করেন। ডিসেম্বর মাসে সেখানে প্রথম কোভিড ১৯ সংক্রমণ শুরু হয়। ২৩ জানুয়ারি শহর লকডাউন করে দেয় সরকার। সারা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকার সময় উহানের বাসিন্দারা কীভাবে তাঁদের আতঙ্ক, ক্রোধ ও আশা প্রকাশ করেছেন, তাই হয়ে উঠেছে ফ্যাং ফ্যাং-এর লেখার বিষয়। একটি লেখায় তিনি জানিয়েছেন, “আমার এক ডাক্তার বন্ধু বললেন, আমরা বুঝতে পারছি, মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমণ শুরু হয়েছে। কর্তৃপক্ষকে সব জানানো হল। কিন্তু তারা আমাদের কথায় গুরুত্ব দিল না। কাউকে সতর্কও করল না।”