লাল ড্রাগনের ফন্দি বুঝতে সক্রিয় সেবি, আতসকাঁচের নীচে ১২ দেশের লগ্নি।

করোনা-কালে সুযোগসন্ধানী প্রতিবেশী। করোনা ঠেলায় টালমাটাল বিশ্ব অর্থনীতি। ভারতও তার বাইরে নয়। ঠিক এরকম এক সন্ধিক্ষণে ভারতে চিনা বিনিয়োগ ঘিরে নজরদারি আরও জোরদার করল সরকার এবং নিয়ামক সংস্থাগুলি। এই বিষয়ে রবিবার আরও একটি নির্দেশিকা জারি করল সিকিওরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়া (সেবি)। সাম্প্রতিক অতীতে চিনা লগ্নি নিয়ে মোট চারটি নির্দেশিকা জারি করল দেশের শেয়ার বাজার নিয়ামক সংস্থাটি। সেবির সাম্প্রতিকতম নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, এ দেশে এমন অনেক সংস্থা আছে যেখানে ঠিকমতো স্ক্রুটিনি করা হয় না। আইনের ফাঁক গলে চিনা সংস্থাগুলি যাতে এই সমস্ত সংস্থায় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে লগ্নি করতে না পারে, তা নিশ্চিত করার জন্য অভিভাবক কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে সেবি। একইসঙ্গে সমস্ত আইনি ফাঁকফোকর বন্ধ করার উপরে জোর দেওয়া হয়েছে ওই চিঠিতে।
এ দিন সংশ্লিষ্ট সরকারি দফতরকে পাঠানো ই-মেলে চিন, হংকং এবং এশিয়ার আরও ১১টি দেশ থেকে ভারতে লগ্নির পূর্ণাঙ্গ তথ্য চেয়ে পাঠিয়েছে সেবি। বিশেষত এই ১৩টি দেশ থেকে যে তহবিল ভারতীয় সংস্থায় লগ্নি করা হচ্ছে তার মধ্যে কোনওটি চিনা লগ্নিকারীদের নিয়ন্ত্রণাধীন কি-না তা জানতে চাওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, কোনও ভারতীয় সংস্থার পরিচালনভার দখলের কোনও লক্ষণ এই ১৩টি দেশের লগ্নির মধ্যে দেখা যাচ্ছে কি, না সেই বিষয়টিও জানাতে বলা হয়েছে।
ভারতীয় সংস্থাগুলির পরিচালনার নিয়ন্ত্রণভার অনৈতিকভাবে যাতে কোনও প্রতিবেশী দেশের হাতে চলে না যায়, তা নিশ্চিত করতে শনিবারই প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নি (এফডিআই) নীতিতে বড়সড় বদল এনেছে কেন্দ্র। নয়া নির্দেশিকা অনুসারে, ভারতের স্থল সীমান্তে অবস্থিত এমন কোনও দেশ থেকে আর সরাসারি এদেশে লগ্নি করা যাবে না। যে কোনও লগ্নির আগে সরকারের অনুমতি নিতে হবে। বিদেশিদের ক্ষেত্রে ভারতে প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নির দু’টি পথ খোলা আছে। প্রথম পথে বিনিয়োগে ইচ্ছুক বিদেশি সংস্থাগুলিকে লগ্নির ক্ষেত্রে দিল্লির অনুমতি নিতে হয় না। অন্যপথে, যে কোনও ভারতীয় সংস্থায় লগ্নির আগে কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদন লাগে।
এত কিছুর পরেও ফরেন পোর্টফোলিও ইনভেস্টমেন্ট (এফপিআই) রুটে ভারতীয় সংস্থায় চিনা সংস্থাগুলির লগ্নি নিয়ে কোনও সুনির্দিষ্ট বিধিনিষেধ নেই। যে কারণে শেয়ারমার্কেটে তালিকাভুক্ত কোনও ভারতীয় সংস্থার ১০ শতাংশ শেয়ার কেনার ক্ষেত্রে চিনা সংস্থাগুলির কোনও আইনি বাধা নেই। এর মাধ্যমে চিনা সংস্থাগুলির এদেশে প্রতারণা করার সুযোগ থেকে যাচ্ছে। যে কারণে এই কড়াকড়ি।
সম্প্রতি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চিনা সংস্থাগুলি বিপুল পরিমানে অর্থলগ্নি করছে। আগ্রাসীভাবে বিভিন্ন সংস্থার পরিচালনার নেতৃত্ব দখলেও উদ্যত তারা। ভারতীয় সংস্থাগুলিও যে তাদের নজরে আছে, তা একটি গৃহঋণ সংস্থার শেয়ার হস্তান্তরের ঘটনায় সম্প্রতি সামনে আসে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন