আমার সকাল: 'অভিজিৎ আমার একার নয়, গোটা দেশের ছেলে', প্রকাশ্যে জানাল নোবেলজয়ী মা

নিজস্ব প্রতিনিধি : অর্ম্যত সেনের পর অর্থনীতিতে নোবেল পাচ্ছেন প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে পুত্রবধূ এস্থার ডাফলোও। আর এই খবর পাওয়ার পর গর্বিত নোবেলজয়ীর মা নির্মলা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপরই হিন্দুস্থান পার্কের বাড়িতে বসে মা নির্মলা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, ‘অভিজিৎ আমার একার নয়, গোটা দেশের ছেলে।’

নির্মলা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও অর্থনীতির গবেষক ছিলেন। দীর্ঘদিন অর্থনীতি নিয়ে চর্চা করেছেন। তাঁর সন্তান নোবেলজয়ী গবেষক অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়।

অভিজিৎবাবুর জন্ম মহারাষ্ট্রের ধুলেতে। ১৯৬১ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি। নির্মলাদেবীও মারাঠা মুলুকের ভূমিকন্যা। ঝরঝরে বাংলা বলতে পারলেও এখনও একটা টান আছে। বাবা দীপক বন্দ্যোপাধ্যায়ও ছিলেন অর্থনীতির অধ্যাপক। নির্মলাদেবী জানালেন, “আমরা আগে থাকতাম মহানির্বাণ রোডে। পাশেই একটা বস্তি ছিল। ওখানে বস্তির ছেলেদের সঙ্গে খেলতে যেত অভিজিৎ। রাস্তাতেও খেলত। আমরা আটকাতাম না। তখন থেকেই তাদের দারিদ্র্য নিয়ে ওর একটা কৌতূহল ছিল।”

নির্মলাদেবী বললেন, “আমাকে অনেকেই বহু বছর ধরে বলেন, ও ভাল কাজ করছে। আজ ও তার যোগ্য সম্মান পেল।” বছরে তিন-চার বারের বেশি দেখা হয় না মা-ছেলের। মাঝে মাঝে এ শহরে আসার সুযোগ হয় হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তথা গবেষকের।

তিনি নিজে অর্থনীতির গবেষক ছিলেন। মা হয়ে ছেলেকে কী টিপস দিতেন? সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে রত্নগর্ভা নির্মলা বন্দ্যোপাধ্যায় সহাস্যে জানালেন, “হাত ধরে কিছুই শেখাইনি। আমি বিশ্বাস করি, তুমি যা করবে, তা থেকেই শিখবে।” এ দিন নির্মলাদেবী আরও বলেন, “ও তো প্রথমে ঠিকই করতে পারছিল না কী নিয়ে পড়বে। শুরুতে ভেবেছিল ফিজিক্স পড়বে। তারপর নিজেই বলল পড়বে না। ভর্তি হল স্ট্যাটিটিক্স নিয়ে। কিছু দিন ক্লাস করার পর বলল, বিটি রোডে যেতে আসতেই অর্ধেক সময় চলে যাচ্ছে। তারপর অর্থনীতি নিয়ে ভর্তি হল প্রেসিডেন্সিতে।” সেখান থেকে স্নাতক হওয়ার পর অভিজিৎবাবুর পড়াশুনা দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে। তারপর হার্ভার্ড।

সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিষয় নিয়েও মাঝে মাঝে ছেলের সঙ্গে ফোনে কথা হয়। কখনও কখনও অনেক বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেন, “তুমি কী এটা করবে? তুমি কী এটা দেখবে?” উত্তরে অনেক সময়ই মায়ের প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়েছেন অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়।

নোটবন্দির সময় অভিজিৎবাবু তীব্র সমালোচনা করেছিলেন কেন্দ্রীয় সরকারের। স্পষ্ট বলেছিলেন, এই পদক্ষেপ ব্যর্থ হবে। মা জানালেন, “এই যে ব্যবস্থা চলছে, তাতে ওর মোটেই সায় নেই। তবে ওর কথা ওই ভালো বলতে পারবে।”

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন