নিজস্ব প্রতিনিধি— গত ২৪ ঘণ্টায় জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে যা হয়েছে সব ঘটনার উপর কড়া নজর রেখেছে আমেরিকা। এমনকী প্রতিটি ঘটনা-পরম্পরার নোটিসও রেখেছে তারা। সোমবার এমনটাই জানানো হয়েছে আমেরিকার তরফে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প খোদ গোটা বিষয়টার উপর নজর রাখছেন, এমনটাই জানিয়েছে হোয়াইট হাউস।
ইউ এস স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র মরগ্যান ওর্টাগাস একটি বিবৃতিতে জানান, “আমরা জম্মু-কাশ্মীরে ঘটা প্রতিটি ঘটনার উপর নজর রাখছি। ভারত এই রাজ্য নিয়ে যে যে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, সব কিছু লিখে রাখছি আমরা। যদিও ভারতের তরফে বলা, হয়েছে, গোটা ঘটনাটাই অভ্যন্তরীণ, এবং সব দলকে মিলে শান্তিতে থাকতে হবে, তাও আমরা ওই রাজ্যের প্রত্যেক ব্যক্তির অধিকার নিয়ে চিন্তিত। আমরাও সব দলকে আবেদন জানাচ্ছি, একসঙ্গে শান্তি বজায় রেখে সব সমস্যা মেটাতে। সীমান্তে শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানাচ্ছি আমরা”
আমেরিকার তরফে এই বক্তব্যের পর কূটনৈতিক মহলের একাংশের ধারণা, কাশ্মীর নিয়ে মধ্যস্থতার যে দাবি ট্রাম্প করেছিলেন, সেখান থেকে সরে আসেনি আমেরিকা। একদিকে যখন ভারত এ ব্যাপারে কোনও তৃতীয় দেশের হস্তক্ষেপ চায় না, অন্যদিকে তখন ইমরান খান ট্রাম্পের সাহায্যের আবেদন করেছেন। আর তাই বারবার ভারতের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নাক গলানোর চেষ্টা করছে হোয়াইট হাউস।
সোমবার সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করে দেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। রাজ্যসভায় রাষ্ট্রপতির দেওয়া বিজ্ঞপ্তি পড়ে শোনান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এর পাশাপাশি তিনি আনেন জম্মু-কাশ্মীর রাজ্য পুনর্গঠন বিল। তাতে বলা হয়, জম্মু-কাশ্মীরকে দু’ভাগ করা হবে। তার মধ্যে একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হবে লাদাখ। অন্য কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হবে জম্মু-কাশ্মীর। লাদাখে কোনও বিধানসভা থাকবে না। কিন্তু জম্মু-কাশ্মীরে বিধানসভা থাকবে। দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলেই প্রশাসনের শীর্ষে থাকবেন একজন করে লেফটেন্যান্ট গভর্নর।
লাদাখ সম্পর্কে রাষ্ট্রপতির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ওই অঞ্চলের আয়তন যথেষ্ট বড়। সেখানে খুব কম লোক বাস করেন। সেখানকার ভূপ্রকৃতি বন্ধুর। লাদাখের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছেন, ওই অঞ্চলটি কেন্দ্রের শাসনের আওতায় আনা হোক। তাতে সেখানকার মানুষের আকাঙ্ক্ষা পূরণ হবে।জম্মু-কাশ্মীর সম্পর্কে বলা হয়েছে, সীমান্তের ওপার থেকে এসে সন্ত্রাসবাদীরা সেখানে অশান্তি সৃষ্টি করছে। সেই পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে জম্মু ও কাশ্মীরকেও পৃথক একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করা হচ্ছে।গত ২৪ ঘণ্টায় কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত নিয়েই আলোড়িত হয়েছে জাতীয় রাজনীতি। সরকার-বিরোধী, দু’পক্ষের যুক্তি, পাল্টা যুক্তির মধ্যে এ বার বাইরে থেকে নিজেদের উপস্থিতির জানান দিল আমেরিকা।