রাজ্যের প্রাক্তন ডিজিপি এবং বর্তমানে রাজ্যের নিরাপত্তা উপদেষ্টার প্রাক্তন স্ত্রী ও শাশুড়ির রহস্যজনকভাবে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেল। সল্টলেকের বিই ব্লকের বন্ধ ঘরের ভিতর থেকে উদ্ধার হয়েছে জোড়া দেহ। ঘটনাকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল এলাকায়। মৃতদের নাম পাপিয়া দে (৭৯) ও শর্মিষ্ঠা কর পুরকায়স্থ (৬০)। একই বাড়ির দু’টি আলাদা ঘরে দু’জনের মৃত্যু ঘিরে তীব্র রহস্য দানা বেঁধেছে। কী কারণে মৃত্যু তা এখনও স্পষ্ট হয়নি।
বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেট সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার গভীর রাতে শর্মিষ্ঠাদেবীর এক আত্মীয় তাদের কাছে খবর পাঠান। তিনি জানান, মা, মেয়ে কেউই ফোন ধরছেন না। এর পর বিধাননগর উত্তর থানার পুলিশ সল্টলেকের বিই ব্লকের ৭১ নম্বর বাড়ির ঠিকানায় গিয়ে দরজা ভেঙে দু’জনকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’জনকে পাশাপাশি দু’টি ঘরে বিছানার উপরে পাওয়া যায়। ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। প্রায় সঙ্গে সঙ্গে উদ্ধার করে বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা দু’জনকেই মৃত ঘোষণা করেন। পরে ময়নাতদন্তের জন্য আরজিকরে পাঠানো হয়।স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েকদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন মা-মেয়ে। প্রতিবেশীদের সঙ্গে আগের তুলনায় তাই মেলামেশাও কমে গিয়েছিল। কিন্তু গত দুদিন ধরে তাঁদের একেবারেই বাড়ির বাইরে দেখতে পাননি কেউ।
Alarmingly rise in Covid +ve cases and Covid deaths in Unlockdown is warning signal @MamataOfficial.
Worrisome Scenario-May 31 till June 06 is an eye opener
May 31: total COVID +ve confirmed 5501; total COVID deaths-253;
June 06 total COVID+ve 7738; total COVID deaths-328.
— Governor West Bengal Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) June 7, 2020
আত্মীয়রাও ফোন করে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি বলে খবর। ঘরের দরজা জানলা ভিতর থেকে বন্ধ থাকায় আর তাঁদের দেখতে না পাওয়ায় সন্দেহ হয় প্রতিবেশীদের।
কীভাবে তাঁদের মৃত্যু হয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। করোনায় মৃত্যু কিনা, তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। তবে এলাকায় স্যানিটাইজ করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, প্রাক্তন নগরপাল সুরজিত্ কর পুরকায়স্থর সঙ্গে তাঁর স্ত্রীর বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছিল বেশ কয়েক বছর আগেই।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাথমিকভাবে দেখে দু’জনের কারও দেহে আঘাতের কোনও চিহ্ন ছিল না। তবে শর্মিষ্ঠাদেবীর মুখে সামান্য গ্যাঁজলা ছিল। তদন্তকারী অফিসারদের একাংশ আত্মহত্যার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না। যদিও কোনও সুইসাইড নোট পাওয়া যায়নি। অন্য দিকে প্রতিবেশীরা পুলিশকে জানিয়েছেন, শর্মিষ্ঠাদেবী এবং তাঁর মা কয়েক দিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। সর্দি-জ্বরের উপসর্গও ছিল। তিন দিন আগে চিকিৎসার জন্য তাঁদের বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ফলে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু কি না, সেই সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে তদন্তকারী অফিসারদের সূত্রে খবর। যদিও কমিশনারেটের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ময়নাতদন্তের আগে বলা সম্ভব নয়, কী ভাবে মৃত্যু হয়েছে। অন্য দিকে, রবিবার সকাল থেকে সল্টলেকের ওই বাড়িতে শুরু হয়েছে স্যানিটাইজেশনের কাজ।
রাজ্যের প্রাক্তন কয়েকজন পুলিশকর্তার সূত্রে খবর, দীর্ঘ দিন ধরেই সুরজিৎবাবুর সঙ্গে তাঁর স্ত্রীর কোনও যোগাযোগ ছিল না। তাঁদের মধ্যে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা চলছে বেশ কিছু দিন ধরে। শর্মিষ্ঠাদেবী ২০১৪ সালে বিজেপিত-তে যোগ দিয়েছিলেন। সল্টলেকে মহিলা মোর্চার কাজকর্মের সঙ্গেও তিনি যুক্ত ছিলেন।