শিলনোড়াকে ফুল- ধূপ দিয়ে পুজো করলে নাকি শিলের ওপর দাঁড়িয়ে যাচ্ছে নোড়া!

*হলদিয়াঃ* রাজ্য তথা গোটা দেশের মানুষ যখন নোভেল করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত ঠিক সেই সময় অন্য গুজবে মত্ত  জেলার  মানুষ। গত সোমবার থেকে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে গুজব রটে যায় যে, শিলনোড়াকে ফুল- ধূপ দিয়ে পুজো করলে নাকি শিলের ওপর দাঁড়িয়ে যাচ্ছে নোড়া। আর এরপর শিলনোড়া পুজো করার ধুম লেগে যায় গোটা এলাকায়। তবে সম্পূর্ণ বিষয়টি ভ্রান্ত এবং অবৈজ্ঞানিক বলে দাবি করছেন পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্যরা।
মানুষের রান্নাঘরের অন্যতম সামগ্রী হলো এই শিলনোড়া। আর সেই শিলনোড়া নিয়েই অবৈজ্ঞানিক কার্যকলাপ। সোমবার থেকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন এলাকায় গুজব রটে যায় যে শিলনোড়াকে নাকি দেবতা জ্ঞানে পুজো করলে দেবতা তার ভক্তের ডাকে সাড়া দিয়ে শিলের ওপর নোড়া দণ্ডায়মান হয়ে রয়ে যাচ্ছে। আর এরপরই শিলনোড়া পুজো করার ধুম লেগে যায় হলদিয়ার দূর্গাচক, মঞ্জুশ্রী মহিষাদল,  গেঁওখালী,  নাটশাল, তমলুক সহ জেলার বিভিন্ন প্রান্তে। লোকমুখে প্রচার হতে হতে এই গুজব রটে যায় গ্রামগুলিতেও। সোমবার- মঙ্গলবার দিনভর এভাবেই গুজবে কান দিয়ে চলে শিলনোড়া পুজো।  অনেকের মত, ভগবান এভাবে সাড়া দিয়ে ভক্তের কাছে দেখা দিচ্ছেন। তবে সমগ্র ঘটনাটি অবাস্তব এবং অবৈজ্ঞানিক বলে দাবি বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্যদের। মঙ্গলবার দিনভর এভাবেই চলতে থাকে শিলনোড়া পুজো। হলদিয়ার পাশাপাশি মহিষাদলের বাসুলিয়া, গোপালপুর সহ বেশকয়েকটি গ্রামে এভাবে ঢাঁক- ঢোল পিটিয়ে শুরু হয়ে যায় শিলনোড়া পুজো। রান্না ঘরে স্থান পাওয়া শিলনোড়া একেবারে স্থান পেয়ে যায় ঠাকুর ঘরেই। হলদিয়ার দুর্গাচকের বাসিন্দা সংগ্রাম দেবনাথ বলেন, “আশেপাশের লোকজনের মুখে শুনেছি শিলনোড়া পুজো করার কথা। এরপর আমার বাড়ির সদস‍্যারা পুজো করে দেখা গেলো শিলের ওপর নোড়া দাঁড়িয়ে থেকে যাচ্ছে।”
এবিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কমিটির সহ- সভাপতি ডাঃ সুব্রত মাইতি বলেন, “শিলনোড়া পুজো করার কোনো বৈজ্ঞানিক যুক্তি নেই। এগুলো সম্পূর্ণভাবে মিথ্যা অপপ্রচার করা হচ্ছে।” একে মানুষ করোনার আতংকে আতংকিত। তার উপর এই ধরনের গুজবে নতুন করে আতংক ছড়িয়েছে জেলা জুড়ে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন