মানুষ-খুনের অপরাধে ‘মানুষখেকো’ ঘোষণা করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল তাকে। বারো দিনের মধ্যেই সেই মৃত্যু পরোয়ানা কার্যকর করা হল। গত ১১ জুলাই উত্তরাখণ্ডের বদ্রীনাথ বন বিভাগের অন্তর্গত এক জঙ্গলে গুলি করে মারা হয় সেই ‘মানুষখেকো’ চিতাবাঘটিকে। জানা গিয়েছে, কিছুদিনের ব্যবধানে সে দুজন মানুষকে মারে। প্রথম শিকারের পর কিছুদিন চুপচাপ থাকলেও দিন কয়েক আগেই চামোলি জেলায় বছর বারোর এক কিশোরীকে হত্যা করে সে। তার এই দ্বিতীয় মানুষ-শিকারের পরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় তাকে খতম করার। কারণ বারবার মানুষ শিকারে প্রবণতা বৃদ্ধিতে বোঝা যাচ্ছিল মানুষের রক্তের স্বাদ পেয়ে যাওয়ার সে তার স্বাভাবিক শিকারের পরিবর্তে বারবার মানুষকেই শিকার বানানোর চেষ্টা করবে। তাই দ্বিতীয় মানুষ শিকারের পরদিনই ৩০ জুন, ২০২০ তাকে ‘মানুষখেকো’ ঘোষণা করে তার মৃত্যু পরোয়ানায় সই করা হয়।
এরপর শনিবার বদ্রীনাথের ডিএফও আশুতোষ সিং জানান, ৩০ জুন চিতাবাঘটিকে ‘মানুষখেকো’ ঘোষণা করার আগের দিনই সে দ্বিতীয় মানুষ খুনটি করেছিল। এ বছর এখনও পর্যন্ত বদ্রীনাথ বনবিভাগে এটিই একমাত্র ‘মানুষখেকো’ চিতাবাঘ যাকে মারা হল।
শনিবার বন দফতরের নিয়োগ করা বেসরকারি শিকারী বদ্রীনাথ ফরেস্ট ডিভিশনের নারায়ণবাগার রেঞ্জে মানুষখেকো চিতাবাঘটিকে গুলি করে খতম করেছেন। ডিএফও জানিয়েছেন, বদ্রীনাথ ডিভিশনের গয়ারবরাম এলাকায় ওই চিতাবাঘটি প্রথম মানুষ মারে ২৮ মে।
এছাড়া, আলমোড়া ডিভিশনে আরও একটি চিতাবাঘকে ‘মানুষখেকো’ ঘোষণা করা হয়েছে। ওই ডিভিশনের উদাল এলাকায় পরপর দুদিনে চিতাবাঘটির হামলায় দু-বছরের একটি শিশু সহ দু’জন মারা যায়। সেটিকে মারতে উত্তরপ্রদেশ থেকে দুই শিকারিকে নিয়ে আসা হয়েছে।
অপরদিকে শনিবার সকালে একটি পৃথক ঘটনায় নৈনিতাল জেলার একটি জঙ্গলে গবাদিপশুর জন্য ঘাসপাতা আনতে গিয়ে চিতাবাঘের হামলায় বছর ষাটেকের এক মহিলার মৃত্যু হয়েছে। গত ২০ দিনের মধ্যে উত্তরাখণ্ডের কাঠগোদাম অঞ্চলে এটি দ্বিতীয় ঘটনা। এর আগে ২৩ জুন জঙ্গলে ঘাস কাটতে গিয়ে আর এক মহিলাও চিতাবাঘের আক্রমণে প্রাণ হারান।
তবে ওই খুনে চিতাবাঘটিকে এখনই মারার সিদ্ধান্ত নেয়নি বন দফতর। আপাতত তাকে ধরতে খাবারের টোপ দিয়ে ঘটনাস্থলে খাঁচা পাতার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মৃতের পরিবারকে ৩ লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে বন দফতরের পক্ষ থেকে এক লক্ষ টাকার চেক পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।