নিজস্ব প্রতিনিধি : বিয়েবাড়ির হুল্লোড় থেমে গেল বিকট আওয়াজে। মুহূর্তের মধ্যেই তছনছ চারদিক। আত্মঘাতী বিস্ফোরণে কাবুলে নিহত হয়েছে অন্তত ৬৩। আহত প্রায় ২০০। এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে। নিহতদের মধ্যে রয়েছে বহু মহিলা ও শিশু।
শনিবার রাতের কাবুলের ওই বিয়েবাড়িতে অন্তত ১০০০জন আমন্ত্রিত ছিলেন৷ বিয়েবাড়িতে সংখ্যালঘু শিয়া হাজারা সম্প্রদায়ের লোকজনই জড়ো হয়েছিলেন। আচমকাই সেখানে প্রচণ্ড শব্দে বিস্ফোরণ হয়৷ ওইদিন রাতে উত্তর কাবুলে ওই বিস্ফোরণ ঘটে শিয়া সম্প্রদায়ের একটি বিয়েবাড়ির অনুষ্ঠানে। সাধারণভাবে বিশাল ধুমধাম হয়ে থাকে আফগানদের বিয়েতে। বিয়ের অনুষ্ঠানে সাধারণভাবে পুরুষ ও মেয়েদের পৃথকভাবে বসার ব্যবস্থা করা হয়। এক্ষেত্রেও সেটাই করা হয়েছিল। আত্মঘাতী বেমারু হামলা চালায় পুরুষদের দিকে।
ঘটনার এক প্রত্যক্ষদর্শী মহম্মদ ফারাগ স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘‘কেউ কিছু বোঝার আগেই গোটা এলাকাটা কেঁপে ওঠে। প্রাণে বাঁচার জন্যে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। বিস্ফোরণের পরেই গোটা হল ধোঁয়ায় ঢেকে যায় বলে জানিয়েছেন তিনি। প্রায় ২০ মিনিট সেখানেই আহত অবস্থায় পড়ে ছিলেন তিনি। চারদিকে শুধু আর্তনাদ ও কান্নার আওয়াজ শুনতে পাওয়া যাচ্ছিল। বিস্ফোরণের দু’ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও মৃতদেহ উদ্ধার শেষ হয়নি।’’ গোটা ঘটনার কড়া নিন্দা করেছেন কাবুল। সরকারি মুখপাত্র ফিরোজ বাসরি টুইট বার্তায় লিখেছেন,‘‘জঙ্গিরা আফগানদের সুখী দেখতে পারে না। কিন্তু এভাবে মানুষ মেরে আমাদেরথেকে কিছু আদায় করা যাবে না।’’
আফগানিস্থানে সাধারণভাবে শিয়া সম্প্রদায়ভূক্ত হাজারাদের ওপর হামলা চালায় তালিবান। তবে শনিবারের বিস্ফোরণের কোনও দায় তালিবান বা অন্য কোনও গোষ্ঠী স্বীকার করেনি। নিরাপত্তার কড়াকড়ি কম থাকায় এই জায়গাগুলিকে বেছে নেয় জঙ্গিরা।
এর আগে গত ৭ আগস্ট কাবুলে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে৷ আফগানের নিরাপত্তারক্ষীদের লক্ষ্য করে বোমা ছোঁড়া হয়৷ ওই নাশকতায় প্রাণ গিয়েছিল কমপক্ষে ১৪ জনের। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই আবারও বিয়েবাড়িতে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় আতঙ্কিত প্রায় সকলেই৷